শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ, ১৪৩১
বিনোদন ডেস্ক।।
‘সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ছিল অনেক আগের। তবে যখন ‘পদ্মপুরাণ’-এর প্রস্তাব পাই তখন ভেতরে ভয় কাজ করছিলো। কারণ, এ ধরনের চরিত্র আগে কখনো পাইনি। তখন নির্মাতাকে বলেছিলাম, আপনার গল্প খুবই ভালো লেগেছে। সিনেমাটিতে যেই অভিনয় করুক, হলে গিয়ে দেখব। পরে নির্মাতা সাহস দেন। কাজটি করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আমার সেরাটা দিয়ে অভিনয় করেছি।’ এভাবেই ‘পদ্মাপুরাণ’ এ যুক্ত হওয়া নিয়ে বললেন মডেল-অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ।
এক নারী পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা। মাথায় চুল নেই, হাতের নখ বড় বড়। এই হলো ‘পদ্মাপুরাণ’ ছবির পোস্টার। যার নামের ওপর ছোট ছোট শব্দে লেখা ‘হার না মানা নদীর গল্প’। এমন একটি পোস্টার প্রকাশের পর থেকেই আলোচনায় আসে পদ্মাপুরাণ ছবিটি। পোস্টারেই ইঙ্গিত দেওয়া- নদীপাড়ের মানুষদের ঘিরে এর গল্প। যে গল্পটি সংগ্রামের, ঘুরে দাঁড়ানোর ও সমাজের ভুলগুলোকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার। নদীপাড়ের মানুষ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাপন করে জীবন। নদীতে পানি আসা মানেই তাদের মুখে হাসি। আর নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে তাদের জীবন। নদীকে নির্ভর করে যাদের জীবিকা, তারা নদীর পানি কমে যাওয়ায় অভাবের মুখে পড়ে। দেখা দেয় বিভিন্ন সমস্যা। এমন গল্প নিয়েই ‘পদ্মাপুরান’।
ছবিটি নির্মাণ করেছেন রাশিদ পলাশ। ছবিটির শুটিংয়ে নানা অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। সব অভিজ্ঞতা ছাপিয়ে ছবিটি শেষ করেছেন তিনি। আগামীকাল এ ছবিটি মুক্তি পাবে।
প্রসূন আজাদ বলেন, ‘এ ছবিতে নদীপাড়ের মানুষের জীবনের গল্প বলতে চেয়েছেন নির্মাতা। যেটা একেবারেই আমাদের গল্প। পদ্মাপাড়ের মানুষের গল্প। আমাদের পুরো টিমের জন্যই পদ্মাপুরাণ একটা যুদ্ধ ছিল। পদ্মা নদীর চরে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে শুটিং করেছি আমরা। পুরো টিমের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই হতো না এ অসাধ্য সাধন। এবার আমরা পরিশ্রমের ফল পাব। ছবির শুটিংয়েও দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রসূন অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মুসাফির’। ‘পদ্মাপুরান’ ছবিটি যখন মুক্তি পাচ্ছে তখন পর্দায় প্রসূন অভিনয়ে অনিয়মিত। শুরু করেছেন জীবনের নতুন অধ্যায়। চলতি বছর ৩০ জুলাই বিয়ে করেছেন। বিয়ের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় ‘পদ্মাপুরাণ’ মুক্তির খবর পান। এবার বিয়ের দুই মাসের মাথায় তার অভিনীত ছবি আসছে প্রেক্ষাগৃহে। স্বভাবতই খুশি এ অভিনেত্রী।
অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন। এর পেছনে কোনো কারণ রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসূন বলেন, না, বিশেষ কোনো কারণ নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকা অসম্ভব। হ্যাঁ, এটি সত্যি যে, শোবিজে কাজ কম করছি। কিন্তু একেবারে হারিয়ে যাইনি। লাগাতার অভিনয় করা আমার ভালো লাগে না। বেছে বেছে কাজ করতে চাই বলেই দর্শক অভিনয়ে আমাকে তেমন পাচ্ছেন না। গত কয়েক দিন ‘পদ্মাপুরাণ’ ছবির প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কেটেছে। বিভিন্ন চ্যানেলে আমন্ত্রণ পাচ্ছি। এ ছাড়া ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে।
২০১৬ সাল থেকে নিজেকে অভিনয় থেকে প্রায় গুটিয়ে নিয়েছেন প্রসূন। গত কয়েক বছরে চারটি ছবি করলেও নাটকে অনুপস্থিত। এরই মধ্যে তিনি শেষ করেছেন নুরুল আলম আতিকের ‘মানুষের বাগান’, জায়েদ রেজওয়ানের ‘মৃত্যুপুরী’ এবং নিশীথ সূর্যের ‘পায়রার চিঠি’ ছবির কাজ।
মুক্তির অপেক্ষায় তার অভিনীত ‘মানুষের বাগান’ ছবিটি। এতে তাকে দেখা যাবে একজন চিত্রপরিচালকের ভূমিকায়। যে মেয়েটি সিনেমা ও ডকুমেন্টারি বানায়। তার চলার পথের জার্নি দেখানো হবে ছবিতে। এ ছবিটি নিয়ে আশাবাদী প্রসূন। বাস্তবেও অভিনয়ের বাইরে পরিচালনা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন প্রসূন। ২০১৫ সালে ‘কুহেলিকা’ নামে একটি সিনেমা নির্মাণ শুরু করেছিলেন। এটি প্রযোজনাও করেছিলেন তিনি। যদিও ছবির কাজ বেশিদূর এগোয়নি।
এ প্রসঙ্গে প্রসূন বলেন, অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনার স্বপ্ন দেখেছি। যে জন্য অভিনয় কমিয়ে পরিচালনার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তবে আমার প্রথম স্বপ্নই ভঙ্গ হয়েছে। আমি আশাবাদী মানুষ। সময়-সুযোগ হলে আবারও পরিচালনা করব।