শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
রূপালী স্বাস্থ্য।।
প্রেগনেনসি বা গর্ভ ধারণ একটি স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। গর্ভ ধারণকালীন পুরো সময়টিকে আমরা ৩টি ভাগে বিভক্ত করে থাকি। ২য় ত্রৈমাসিক কালীন সময়ে ( ৪ মাস থেকে ৬ মাস) একজন মায়ের বাড়তি সচেতনতা ও সতর্কতা জরুরি। চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-
প্রেগনেন্সির ২য় ত্রৈমাসিক কালীন কিছু গুরুত্বপূর্ণ শরীরবৃত্তীয় পরিবর্তনঃ
১. পেটের নিচের অংশ বড় ও ভারী অনুভব হওয়া।
২. মাথা ঝিম ঝিম করা।
৩. ১ম ত্রৈমাসিক কালীন বমি বমি ভাব ও মাথা ঘুরানো কমে আসা।
৪. মাথায় এক ধরণের হালকা অনুভূতি হওয়া (রক্তচাপ কমার কারণে)।
৫. ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া।
৬. ওজন বেড়ে যাওয়া।
৭. পেট, স্তন, উরু বা নিতম্ভের উপরের দিকে প্রসারণ চিহ্ন দেখা দেয়
৮. হাত-পা ফুলে যাওয়া।
৯. ত্বকের পরিবর্তন- স্তনের চারপাশের ত্বকের রং গাড় হয়ে যেতে পারে।
লক্ষণীয় বিষয়: আপনি অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন যদি নিম্নের লক্ষণগুলো দেখা যায়-
১. মাথা ঘুরানো ও সাথে বমি ভাব,
২. চোখ ও ত্বকে হলুদ ভাব,
৩. দ্রুত শরীরের ওজন অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া
৪. হঠাৎ মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত ও চাকা যাওয়া শুরু করলে।
প্রেগনেনসির ২য় ত্রৈমাসিক কালীন বাচ্চার শারীরিক বিবর্ধন: ২য় ত্রৈমাসিক কালীন বাচ্চার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি চলতে থাকে, বাচ্চা শুনতে ও গিলতে আরম্ভ করে। সামান্য চুল দেখা যায়। ২য় ত্রৈমাসিকের প্রায় শেষের দিকে বাচ্চা নড়াচড়া করতে আরম্ভ করে, এসময় মায়েরা বাচ্চার ঘুমিয়ে থাকা ও জেগে ওঠার চক্র অনুভব করতে পারে।
আমেরিকান প্রেগনেনসি অ্যাসোসিয়েশন এর মতে, ২য় ত্রৈমাসিকের শেষের দিকে বাচ্চার উচ্চতা প্রায় ১৪ইঞ্চি এবং ওজন ২ পাউন্ড এর থেকে কিছু বেশি হয়।
ডাক্তারের কাছে গিয়ে করণীয়ঃ এ সময় ২ সপ্তাহ অন্তর নিম্নলিখিত চেকআপ করা উচিত-
রক্ত চাপ ও ওজন পরিমাপ
রক্তে সুগারের পরিমাণ চেক করা
আলট্রাসনোগ্রাফি
জন্মগত ক্রুটি ও জেনেটিক স্ক্রিনিং
অ্যামনিও সেন্টেসিস
এ সময় বাচ্চার লিঙ্গ নির্ধারণ আলট্রাসনগ্রাফির মাধ্যমে করা যায়
২য় ত্রৈমাসিক কালীন গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরামর্শঃ করণীয়-
ভিটামিন, মিনারেল ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার অব্যাহত রাখুন
প্রেগনেনসির ব্যায়াম অব্যাহত রাখুন
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখুন (অপরিষ্কার দাঁত ও মুখ প্রি ম্যাচিউর লেবার এর জন্য দায়ী)
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে
ন্যূনতম ১০ ঘন্টা ঘুমান।
বাচ্চার নড়াচড়া খেয়াল রাখুন।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।