শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১
এইচ,এম হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)।।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন ধসে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাএছাত্রী ও অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের সারে তিন শতাধিক ছাএছাত্রী ও শিক্ষক প্রতিদিন মৃতুঝুঁকির মধ্যে ক্লাস করছেন। ২১ বছর আগে নির্মিত বিদ্যালয়ের একতলা ভবনটির বিভিন্ন কক্ষে ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়া ছাড়াও ভবনের ভিম ভেঙ্গে যাওয়ায় ও ফ্লার ডেবে গেছে এবং ভিমের রট বেড়িয়ে গেছে বিকল্প স্থান না থাকায় ঝুঁকিপুর্ন ভবনেই ছাএছাত্রদের ক্লাস করতে হচ্ছে।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, আন্ধারমানিক নদীর তীর ঘেষে ১৯৬৮ সালে ফরিদগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৯৫ সালে পুর্নরুপ হিসেবে মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করন প্রতিষ্টি লাভ করে।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মান করেন। কিন্তু ঠিকাদারের অতি মুনাফা বানিজ্যের কারনে ভবন নির্মানের ২১-২২ বছরের মধ্যেই এ বেহাল ভঙ্গুর দশার সৃষ্টি হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের ধসে পড়া ছাদের দৃশ্য। ভবনের ভিম গুলোর পলেস্তারা খসে পড়ে মরচে ধরা রড বের হয়ে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা ভবনের প্রতিটি রুমে ও ছাদে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে ইট বের হয়ে গেছে। ফ্লার ডেবে গেছে। ভেঙ্গে গেছেলো দরজা জানলা কিন্তু একটি এনজিও মাধ্যমে কিছু টাকা পাওয়া তা দিয়ে দরজাÑজানলা মেরামত করানো হয়। একটু দমকা হাওয়া হলেই ঝুর ঝুর করে খসে পড়ে দেয়ালের পলেস্তারা। এ অবস্থার মধ্যে সারে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ক্লাস করছে। প্রতিদিনই কোন না কোন ক্লাসে ছাদও দেয়াল থেকে বালু সিমেন্টের খন্ড পড়ছে। কয়েক দিন আগে ওই ভবনের ছাদ ধসে পড়া অল্পের জন্য রক্ষা পায় অনেক গুলো প্রান। তার পর ও বিদ্যালয়ের শ্রেনি কক্ষের সংকটের কারনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে আসছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকারাও আতঙ্ক অবস্থায় রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সব সময় আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৬ষ্ট শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা ৩৫০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ৮ম শ্রেনির মোকছেদুল, ৯ম শ্রেনির আয়শা সিদ্দিকা জানায়, আমাগো তো মাঝে মধ্যেই ভয় করে ক্লাস করতে। মাঝে মধ্যে সিমেন্টের খন্ড পড়ে আর বাতাস হইলে তো খালি বালি উড়ে। দেখেন দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে ইট বের হয়ে গেছে। ফ্লার ডেবে গেছে। আমরা ক্লাসে শিক্ষক ও বইয়ের দিকে যত না তাকাই তার চেয়ে বেশি তাকাই ছাদের দিকে। ক্লাসে বসলেই ছাদ থেকে বালু পড়ে জামাÑপ্যান্ট হয়ে যায়। খাতা লিখতে শুরু করলে বালুকনা পড়ে নষ্ট হয়ে যায়।
একাধিক অভিভাবক জানান, দুই তিন কিলোমিটারের মধ্যে ও আর স্কুল না থাকায় সন্তানকে ভবন ঝুঁকিপুর্ন হলে ও বাধ্য হয়ে স্কুলে পাঠাচ্ছেন। এখন যে অবস্থা তাতে আল্লাহর ওপর ভরসা ছাড়া আর উপায় কি।
ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র সিমলাই জানান, বর্তমানে ভবনের অবস্থা তাতে আমরা চিন্তিত। ভবনের দুরাবস্থায় বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের সারে তিন শতাধিক ছাএছাত্রী ও শিক্ষক প্রতিদিন মৃতুঝুঁকির মধ্যে ক্লাস করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান জানান, আমাদের মাধ্যমে ভবন দেয়া হয়না। এটা জনপ্রতিনিধি মাধ্যমে দেয়া হয়। সাধারনত এমপি সাহেবের সুপারিশ মাধ্যমে ভবন দেয়া হয়।