শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
রূপালী বার্তা।।
মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষও বন্ধ্যাত্বের কারণ। শুধু মহিলাদের দায়ী করা ঠিক নয়। নারী ৪০-৫৫ শতাংশ, পুরুষ ৩০-৪০ শতাংশ ও উভয়ই ১০ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী।
শুক্রানু উৎপাদন ও পরিবহন সমস্যাই মূলত পুরুষ বন্ধ্যাত্বের কারণ। বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণটি নির্ণয় করা যায়। দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে টেসটিস বা শুক্রাশয় থেকে সঠিক সংখ্যক শুক্রাণু তৈরি হয় না অথবা শুক্রাণুর গুণগত মান ঠিক থাকে না। শুক্রবাহী নালি অথবা পুরুষাঙ্গের গঠনগত সমস্যার কারণে শুক্রাণু বীর্যরসে পৌঁছাতে পারে না। অর্থাৎ শুক্রাণু তৈরি হওয়ার পর থেকে গতিপথে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে। বীর্য পরীক্ষার রিপোর্টে তখন শুক্রাণু পাওয়া যায় না।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের কারন সমূহঃ
১. শুক্রাণু তৈরি বা উৎপাদনে সমস্যাঃ জেনেটিক বা ডিএনএ ঘটিত কারণে অনেক সময় একজন পুরুষ শুক্রাণু উৎপাদন ক্ষমতা হারাতে পারে বা জন্মগতভাবে তার এ ক্ষমতা নাও থাকতে পারে।
২. হরমোন সমস্যা
৩. শুক্রাণু পরিবহনে সমস্যা
৪. জীবনযাপনের রীতিনীতি
৫. যৌন সমস্যা
৬. মোবাইল ফোন
৭. নেশাজাতীয় দ্রব্য
৮. ইনফেকশন (যক্ষ্মা, গনোরিয়া)
৯. প্রোস্টেট গ্রন্থি সংক্রমণ
১০. ঠধরৎরপড়পবষবং (ংপৎড়ঃঁস এর মধ্যে শিরা বৃদ্ধি)
১১. ক্ষতিগ্রস্ত শুক্রাণু
১২. অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ব্যবহার
১৩. ধূমপান
১৪. অ্যালকোহল পান
১৫. ওষুধের অপব্যবহার
১৬. বিষাক্ত রাসায়নিক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
১৭. হেভি মেটাল এক্সপোজার বিকিরণ
১৮. যোনি পথের লুব্রিকেন্ট
১৯. সার্জারী (হার্নিয়া, ব্লাডার নেক সার্জারী)
২০. হাইপোসপেডিয়াস ইত্যাদি।
চিকিৎসা: কারণ অনুযায়ী পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেমন- শারীরিক অক্ষমতা, শুক্রাণুর সমস্যাসহ পুরুষ বন্ধ্যাত্বের বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা আছে। চিকিৎসার পাশাপাশি সঠিক জীবনযাত্রা, নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার, ভেজালমুক্ত খাদ্য গ্রহণ ইত্যাদি পুরুষের বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধ: বাবা হতে চান এমন সব পুরুষের উচিত পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া। ধূমপান, মদ্যপান, নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলা। টাইট আঁটসাঁট পোশাক না পরা। অত্যাধিক তাপমাত্রার পরিবেশ, এক্সরে, সিটি স্ক্যান হয় এমন জায়গায় চলাচল না করা, শরীরের সঙ্গে অণ্ডকোষ দীর্ঘ সময় চেপে লেগে থাকে এমন অবস্থান পরিহার করা, তলপেটের ওপর ল্যাপটপের ব্যবহার না করা, হরমোন/স্টেরয়েডের মাধ্যমে উৎপাদিত খাদ্য বর্জন করা। আবার শরীরের সঠিক ওজন বজায় রাখাও পুরুষের বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধের জন্য জরুরি। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করা।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।