শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩১
গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা।।
ঢাকা-বরগুনা নৌরুটে ঝালকাঠির সুগান্ধা নদীতে এম ভি অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ডে ৪১ জন যাত্রীর মৃত্যু ও অসংখ্য যাত্রী পুড়ে আহত হওয়ার ঘটনায় লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখের বিরুদ্ধে বরগুনা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন বরগুনা বারের সদস্য আইনজীবী ও ইউপি চেয়ারম্যান মো: নাজমুল ইসলাম নাসির। রোববার সকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম এ মামলাটি গ্রহন করে বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জকে এজাহার গ্রহন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় লঞ্চের মালিকের ঠিকানা দেখানো হয়েছে সুত্রাপুর, পুরাতন ঢাকা।
এ মামলায় ৬ জন সাক্ষ্যর মধ্য বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ ও অ্যাডভোকেট এমডি আনিসুর রহমান। কারন ঘটনার দিন যাত্রী হিসেবে তারা ওই লঞ্চে ছিলেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টার সময় ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। এসময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪১ জন মৃত্যু বরণ করেন। অসংখ্য যাত্রী আগুনে পুরে বরিশাল ও ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে বরগুনায় ৩৭ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। শুক্রবার বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ঝালকাঠি থেকে এ পোড়া লাশ গ্রহন করেন ১০ টি লাশ সনাক্ত করে তাদের স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করেন। বাকি ২৭ টি বেওয়ারিশ লাশ বরগুনার পোটকাখালী গণকবরে দাফন করেন। মামলায় আরো উল্লেখ করেন ঘটনার দিন লঞ্চটিতে আগুন লাগার পরে ভাসতে ভাসতে ঝালকাঠি জেলার কলাবাগান এলাকার কিনারায় পৌছলে ফায়ার সার্ভিস ও ঝালকাঠি প্রশাসনের লোকজন আসিয়া কতিপয় যাত্রীদের অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করিয়া ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতালে এবং বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
প্রায় অর্ধ শতাধিক মৃত দেহ উদ্ধার করিয়া শনাক্তকৃত কিছু লাশ স্বজনদের নিকট বুঝিয়ে দেন বাকি লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসক বরাবরে হস্তান্তর করেন। ঘটনার সময় হতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আসামী স্বয়ং অথবা তার কোন প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে স্বজন হারানো অভিভাবকদের শান্তনা পর্যন্ত প্রদান করেননি। আসামী পক্ষ বে-পরোয়া ভাবে লঞ্চ চালায়, ভাড়ার জন্য নিরাপত্তাহীন, অতিরিক্ত বোঝাইকৃত লঞ্চ যোগে জলপথে লোক বহন করে, অগ্নি বা দাহ্য বস্তু সম্পর্কে ত্রুটি রেখে, বিস্ফোরক পদার্থ ও যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ত্রুটি রেখে অবহেলা ও বে-পরোয়া যান চালানোর মাধ্যমে শত শত যাত্রীদের মৃত্য ঘটানোর অপরাধ করেছেন। এ মৃত্যুর জন্য লঞ্চ মালিক নিজে দায়ী।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নাসির উদ্দিন বলেন, মালিক যদি লঞ্চের ইঞ্জিন ত্রুটি সেরে এবং আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি রাখতেন তাহলে এত মানুষের মৃত্যু আহত ও যান মালের ক্ষতি হত না। লঞ্চের অধিকাংশ যাত্রী বরগুনার। এ কারনে আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনস্বার্থে মামলা করেছি।
এ মামলার বাদীর আইনজীবী সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, কোর্টে যখন মামলা করি তখন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন লঞ্চ চালকরা দ্রুত যে কোন কিনারে ভিরাতে পারত। যদি লঞ্চ কিনারে ভিরাতো তাহলে এত লোকের প্রান হানি হত না। আদালতের অত্র আদেশে বরগুনা বাসী খুশি। অত্র মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলু ও মো: আরিফুর রহমান সোহাগ মোল্লা।