শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১
আইন-আদালত॥
দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে ঝালকাঠি জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারি প্রকৌশলী নুরুল আমিন সিকদারকে ৬ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত।
পৃথক দুটি ধারায় এই শাস্তির পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। একই সঙ্গে অবৈধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত বরিশাল নগরীর আলেকান্দা এলাকায় নিজ মালিকানায় নির্মিত ৫ তলা বিশিষ্ট লাচিন ভবন, একই এলাকায় স্ত্রী ইসরাত জাহানের নামে ক্রয় করা ১২ শতাংশ জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ঢাকার মগবাজারে ছেলে আদিল আমিন লাচিনের নামে ইস্টার্ন টিউলিপ ভবনের ১৬২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটও বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন বিচারক। বরিশাল বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মহসিনুল হক বুধবার বিকালে এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত প্রকৌশলী নুরুল আমিন সিকদার উজিরপুর উপজেলার মৃত ইয়াকুব আলী সিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
আদেশে উল্লেখ করেছেন, অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা বরিশাল-ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রটকে অর্পণ করা হল। এছাড়া নুরুল আমিন সিকদারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
আদালতের বেঞ্চ সহকারি রবিউল আলম জানান, ২০০৯ সালের ২৮ অক্টোবর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঝালকাঠি জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী নুরুল আমিন সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
বরিশাল দুদকের সহকারী পরিচালক এমএইচ রহমতউল্লাহ এই মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ আনা হয়- নুরুল আমিন সিকদার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধভাবে এক কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪১ টাকা, স্থাবর ও মূল্যবান সম্পদ অর্জন করেছে।
লাচিন ভবন ও ইস্টার্ন টিউলিপ ভবনের ফ্ল্যাটের নির্মাণ ব্যয় ৫১ লাখ ৩২ হাজার ১৮ টাকার তথ্য গোপন এবং উজিরপুর সাব রেজিস্টার অফিসের মাধ্যমে দানপত্র দলিলে নিজ নামে ৬ জন আত্মীয়ের কাছ থেকে ৪.২৫ শতাংশ জমি ক্রয় করার তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে নুরুল আমিনকে অভিযুক্ত করে ২০১০ সালের ৩০ আগস্ট দুদকের সহকারী পরিচালক এমএইচ রহমতউল্লাহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
বিচারক ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার দুই ধারায় তিন বছর করে মোট ৬ বছরের কারাদন্ড ও তিন কোটি টাকা জরিমানার আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।