শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বরিশালে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছাতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল ৮ টা থেকে দুইটি রুটে বাস ছেড়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবহন পুলের ম্যানেজার মোঃ মেহেদী হাসান।
এর আগে পরিবহন পুলের ম্যানেজার মোঃ মেহেদী হাসান সাক্ষরিত নোটিশে রুট-২ ও রুট-৫ এর জন্য নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের পরিবহনের উদ্দেশ্যে পাঁচটি রুটের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। যা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে নড়াইল হয়ে যশোর (সকাল ৮:০০ টায়) ঝালকাঠি ও পিরোজপুর(সকাল ৮:৩০ টায়) বাগেরহাট(৮:৩০ টায়), পটুয়াখালী (৯:০০ টায়) এবং বরগুনার (৯:০০ টায়) উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী আক্তার বলেন, ক্যাম্পাসে পরিক্ষার জন্য এসেছিলাম। হঠাৎ করে লকডাউনের কথা শুনে পরিক্ষার মাঝেরও রিস্ক নিয়ে বের হয়েছিলাম বাড়ি যাবো বলে কিন্তু যেতে পারিনি কারণ লকডাউনে কোন গাড়ি চলছিলো না। তারপর থেকেই অনিশ্চয়তায় ভুগতেছিলাম, বাড়ি যেতে পারবো কি পারবো না। ঠিক তখন স্টুডেন্টদের এমন অনিশ্চয়তা দেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিজস্ব বাসে করে আমাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়ায় অনেক অনেক খুশি যা ঈদের আনন্দকেও হার মানায়। ধন্যবাদ ববি প্রশাসনকে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরুল কায়েস বলেন, এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। লকডাউন ছেড়ে দিলেও ডাবল ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হয়তো আমাদের বাড়ি ফিরতে হতো। কিন্তু গণপরিবহনে যাতায়াতের ফলে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে হয়তো কয়েকশো শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হয়ে যেত। কারণ গণপরিবহন যাদের সাথে যাতায়াত করতাম তারা কে কোথা থেকে এসেছে কোন কিছুই তো বলা যায়। সেই ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সার্বিক বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবহন পুলের ম্যানেজার মোঃ মেহেদী হাসান জানান, আজকে আমাদের ২ নম্বর ও ৫ নম্বর রুটের জন্য বাস ছেড়ে গিয়েছে কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে দেখছি ২ নম্বর রুটে (ঝালকাঠি, পিরোজপুর হয়ে যশোর) রেজিষ্ট্রেশনে ছিল ২২৯ জন শিক্ষার্থী কিন্তু বাসে উঠেছে মাত্র ১৩৫ জন। তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই যে ১৩৫ জন রেজিষ্ট্রেশন করেছে তারা কি ভূয়া রেজিষ্ট্রেশন ছিল? অপরদিকে রুট নম্বর ৫ এ- ১৮৬ জনে মাত্র ৬৫ জন এসেছে।
তিনি বলেন, নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার জন্য আমরা বদ্ধ পরিকর আছি এবং সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। তবে অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করেছে যা দুঃখজনক। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীবান্ধব। ইতোপূর্বেও শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছি, এখনও করছি এবং আগামীতেও করবো, তবে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই এসকল বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য যেসব নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে-
১. গাড়ীতে উঠার সময় শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে ।
২. গাড়িতে উঠার আগে শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে নিতে হবে এবং কারো করোনা উপসর্গ
থাকলে যাত্রা পরিহার করতে হবে।
৩. যাত্রাকালীন অবস্থায় নাক-মুখ ঢেকে রেখে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক।
৪. বড় লাগেজ/ব্যাগ পরিহার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে মালামাল/লাগেজ পরিবহণের জন্য বক্স সুবিধা না থাকায় ব্যাগ সাথে রাখতে হবে ।
৫. চালকের মনযোগ নষ্ট হতে পারে এমন যে কোন কর্মকান্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ (গান বাজনা, নাচানাচি ইত্যাদি)।