শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
এ.এফ.এম রিয়াজ, বাউফল।।
পটুয়াখালীর বাউফলে জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে তোরন নির্মাণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংর্ঘষে নিহত ১ আহত হয়েছে ১০জন।
এ ঘটনায় বাউফল পৌর শহরের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আহতদের বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা তাপস ও ইমাম কে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধা ৭.৪৫ ঘটিকায় মৃত্যু বরন করে যুবলীগ নেতা তাপস। ২৪ মে রবিবার দুপুরে বাউফল জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে ঘটে ওই হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা।
জানাগেছে, বাউফল উপজেল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফহুইপ আ স ম ফিরোজ সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক বাউফল থানা সংলঘ্ন ডাক বাংলোর সামনে পৌর অওয়ামী লীগের সৌজন্যে প্রতি বছর তোরন নির্মাণ করেন। কিন্তু আম্পান ঝড়ে ওই নির্মাণাধীন তোরণ ভেঙ্গে পড়লে দলীয় কর্মীদের দিয়ে তোরণের ব্যবহৃত বাঁশ কাঠ সরিয়ে ফেলে।
ঘটনার দিন সকালে ওই একই স্থানে বাউফলের পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল তোরন নির্মাণ করার জন্যে তার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিলে কর্মীরা তোরন নির্মানের কাজ শুরু করে। এ সংবাদ শুনে সাবেক চিফহুইপ সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফারুক তার নেতা কর্মীদের নিয়ে তোরন নির্মানে বাঁধা প্রদান করেন। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ঘটনাস্থলে আগমনে মেয়র ও চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের মধ্যে কথা কাটাকটি চলতে থাকার এক পর্যয়ে মেয়র সমার্থীত নেতা কর্মীরা চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের কর্মীদের উপর হামলা করে। এতে চিফ হুইপ গ্রুপের জসিম (৩৪),শামিম (২৫), পৌর যুবলীগ সভাপতি মামুন খান (৪৭), ইয়ার খান(৪৩)আহত হয়।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী পুলিশ সুপার মোঃফারুক হোসেন উভয় গ্রুপের নেতাদের নিয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠক চলাকালিন সময়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল আহম্মেদ মনির তার নেতা কর্মীদের নিয়ে ঘটনা স্থলে আসলে উভয় পক্ষ দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা তাপস (৩৪) ও ইমাম(২৩) গুরুতর জখম হয়। পুলিশ এসময় দু’পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ান্ত্রণে আনতে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে।
চিফ হুইপ সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক বলেন, “পুরাতন তোরণ ভেঙ্গে যাওয়ায় এটা অপসরণ করে সরকারের করোনা সংক্রামন প্রতিরোধের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সংবলিত শতর্কীকরন তোরণ ডাক বাংলোর সামনে সেতুর মুখে আমরা নির্মাণ করব। আর বিগত দিনগুলোতে পৌর মেয়রের তোরণ থানার সামনে করে আসছে। কিন্তু কি উদ্দেশ্যে ? কি কারণে আমাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে মেয়র সাহেব তোরণ করা হচ্ছে তা জিজ্ঞাসা করতেই মেয়র সমর্থিত সন্ত্রাসীরা আমার কর্মীদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এতে আওয়মী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় ১০-১৫ জন কর্মী আহত হয়।”
এ বিষয়ে বাউফল পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, “করোনার সংক্রামনের সাবধানতার জন্য একটি সৌজন্যে তোরণ করতে গেলে চেয়ারম্যার ইব্রাহিম ফারুক ও তার লোকজন এত বাঁধা দেয়। এ বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা চলছিল। পরে উপজেলা নিবার্হী অফিসার জাকির হোসেন আমাকে ও চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুককে নিয়ে থানায় অলোচনার জন্য বসে। থানা থেকে বাহির হয়ে দেখি চেয়ারম্যান সমর্থিত লোক জন আমার দলীয় নেতা কর্মীদের উপর হামলা করে আহত করেছে।”
বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃফারুক হোসেন বলেন, “পৌর মেয়র ও চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুককে নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে দু পক্ষ তোরণ করবে তবে দূরত্ব করে। এরই মধ্যে ফের দু পক্ষ সংর্ঘষ হওয়ার খবর পেয়ে সংর্ঘষ এড়াতে উভয় গ্রুপকে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে ।