শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
লাইফস্টাইল ডেস্ক।।
বাঙালীরা যে খাদ্যরসিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা কবজি ডুবিয়ে খায়- বিরিয়ানি পোলাও কোর্মা কিংবা কালিয়াই হোক। ‘জিভে জল’ এনে দেওয়ার সুস্বাদু মশলার তৈরি ব্যাঞ্জনের এলাহী সম্ভার রয়েছে আমাদের।
মশলার সঙ্গে বাঙালীর আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। মশলা বলতে আমরা বাঙালীরা পাগল! তবে অন্যরা কিন্তু পিছিয়ে নেই। পৃথিবীর অনেক দেশেই রয়েছে যারা ঝাল আর মশলাদার খাবার পছন্দ করেন।
থাইল্যান্ড: থাই কুজিন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় কুজিন। প্রায় সব দেশেই থাই খাবারের জনপ্রিয়তা রয়েছে। স্টার ফ্রাই, স্যুপ, কারি—এ ধরনের খাবার তৈরি করতেই অনেক বেশি পাতা বা হার্ব এবং কাঁচা লঙ্কার ব্যবহার করে। এর মধ্যে লাল লঙ্কার ব্যবহার বেশি দেখা যায়।
এ ছাড়া খাবারকে স্পাইসি করতে রান্নায় প্রচুর পেঁয়াজ, রসুন, আদা, লেমনগ্রাস, পুদিনাপাতা দেওয়া হয়। ‘কায়েং তাই প্লা’ নামের সবজি ও শুঁটকি দিয়ে বানানো তরকারিকে থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি ঝাল খাবার বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া লাল লঙ্কার পেস্ট দিয়ে তৈরি মাছ, মাংস বা সবজির বিভিন্ন রেড কারিও বেশ ঝাল হয়ে থাকে।
মেক্সিকো: মেক্সিকোতেই জন্মায় ১৪০ জাতের লঙ্কা! উত্তর আমেরিকার এ দেশের কোনো খাবারই লঙ্কা ছাড়া হয় না। এমনকি অ্যালকোহলেও অনেক মেক্সিকান লঙ্কা মিশিয়ে খান। এ দেশেই বিখ্যাত হালেপিনো, পবলানো, সেররানো, আঞ্চো আর কুখ্যাত হাবানেরো লঙ্কার জন্মস্থান। মেক্সিকোতে অতিরিক্ত ঝাল খাবার খাওয়া আর এর ঝাল সহ্য করাকে শৌর্যবীর্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মোলে, সালসা, চিলেস রেয়েনো, সোপা দে কামারোন, আগুয়াচিলে, চিলাতে দে পইয়ো ইত্যাদি এ দেশের সবচেয়ে ঝাল খাবারগুলোর মধ্যের অন্যতম।
মালয়েশিয়া: মালয় কুজিন চাইনিজ আর ভারতীয় কুজিনের এক দারুণ সংমিশ্রণ। এ দেশের বিভিন্ন রান্নায় প্রচুর পরিমাণে ঝাল এবং বিভিন্ন রকমের মশলা ব্যবহার করা হয়। ওটাক ওটাককে মালয়েশিয়ার সবচেয়ে ঝাল খাবার বলা হয়। এটি খানিকটা বাংলাদেশের বিন্নি চালের পিঠের মতো। মাছের কিমার সঙ্গে অনেক প্রজাতির মরিচ গুঁড়া আর মশলা মিশিয়ে কলার পাতায় মুড়িয়েই ওটাক ওটাক তৈরি করা হয়।
কোরিয়া: বিশ্বায়নের ফলে কোরিয়ান খাদ্য সংস্কৃতি আজ আমাদের অনেকেরই জানা। কোরীয়দের ঝাল খাওয়া দেখলে যে কেউই অবাক হতে পারে। সব খাবারেই তারা গচুজাং নামের একধরনের লাল লঙ্কার পেস্ট ব্যবহার করে। গচুজাং পেস্ট ছাড়া কোনো কোরিয়ান খাবার কল্পনাই করা যায় না।
আফ্রিকা: আফ্রিকার প্রায় সব দেশের রান্নায় ঝাল আর মশলার ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। যেমন ইথিওপিয়ান কুজিনে বিভিন্ন মসলার সঙ্গে ‘বেরবেরে’ নামের লাল লঙ্কার গুঁড়া দেওয়া হয়। আবার ঘানা, লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়াতে রান্নায় ‘শিটো’ নামের পেস্ট দিতে দেখা যায় যা, কালো গোলমরিচ, পাম তেল, প্রায় গোলমরিচের মতো দেখতে এনিস পেপার দিয়ে বানানো হয়।
জ্যামাইকা: জ্যামাইকার অধিকাংশ মানুষ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত হওয়ায় ঝালের সঙ্গে আছে এদের দারুণ সখ্যতা। এখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত জার্ক চিকেন বানাতে লাগে বেশি পরিমানের মরিচ আর মশলা। যা দিয়ে ম্যারিনেট করা হয়। তবে এ দেশের সবচেয়ে ঝাল খাবারটি বানানো হয় পাঠার মাংস দিয়ে। জ্যামাইকান গোট কারি বানাতে লাগে স্কচ বনেট মরিচ, যা বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচগুলোর মধ্যে একটি। এর স্কোভিল হিট ইউনিট (ঝালের মাত্রা পরিমাপের একক) এক মিলিয়নের বেশি।
চীন: ভাত-মাছ আর বিরিয়ানির বাইরে বাঙালির সবচেয়ে পছন্দের ডিশ হল চাইনিজ। আর কেন হবে নাই বা বলুন! সেই ১৮ শতক থেকে বাঙালি আর চীনারা একসঙ্গে ওঠা-বসা করছেন। তাই চীনা খাবারের প্রতি বাঙালির ঝোঁক থাকাটা তো স্বাভাবিক। চীনের কিছু অংশ মশলাদার খাবার পছন্দ করে। আপনি যদি চীনের আসল মশলার স্বাদ নিতে চান তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যান এবং শুকনো কাঁচা মরিচ এবং সিচুয়ান মরিচ ব্যবহার করে দেখুন। এরা দুজনেই এমন জিং দেয় যা হার্ড-কোর মশালার প্রেমীদের খুশি করবে! সূত্র-এইসময়।