শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
ভারতের উত্তরাখণ্ডে রবিবার হিমালয়ের একটি হিমবাহ ধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও অনেকে। তাদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে উত্তর প্রদেশও। গঙ্গা তীরবর্তী জেলাগুলোতে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে রাজ্য সরকার। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে চামোলি জেলার জোশিমঠে নন্দাদেবী হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বেগে ধেয়ে আসে পানির স্রোত। তীব্র স্রোতে হৃষিগঙ্গা নদীর ওপর অবস্থিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর দুই ধারে থাকা বহু বাড়িঘর ভেসে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সঞ্জয় সিং রণ তুষারধসের সময়কার পরিস্থিতি বর্ণনা করে বলেন, ‘এটা খুব দ্রুতই ঘটেছে। কাউকে সতর্ক করার মতো সময় ছিল না।’ রেনি গ্রামের একটি উঁচু এলাকায় সঞ্জয়ের পরিবারের বসবাস। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছিলো আমরাও বোধহয় ভেসে যাবো।’
খবর পেয়ে দ্রুত উপদ্রুত এলাকায় পৌঁছায় রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ), ইন্দো-টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি) এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর সদস্যরা। সেনাসদস্যরাও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তপোবন-রেনি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে আইটিবিপি-র মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিপর্যয়ের সময় ১৫০ জনের বেশি শ্রমিক কাজ করছিলেন। ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটিই পানির তোড়ে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ সিং রাওয়াত জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারপিছু চার লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারপিছু দুই লাখ রুপি করে অনুদান দেওয়া হবে। যারা গুরুতর আহত হয়েছেন, তারা ৫০ হাজার রুপি করে পাবেন।
স্রোতের তোড়ে তপোবনের কাছে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একটি সুড়ঙ্গের মুখ। সেখানে আটকে পড়েছিলেন ১৬ জন শ্রমিক। তাদের সবাইকে অবশ্য জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে আইটিবিপির জওয়ানরা। এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌবাহিনীর ডুবুরিদের দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। উদ্ধারকাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বিমানবাহিনীও।
পাঁচ টনের ভার নিয়ে বিমানবাহিনীর সি১৩০ বিমানে করে ৬০ জনের এনডিআরএফের একটি দল গাজিয়াবাদের হিন্দোন বিমানবন্দর থেকে দেরাদুনে পৌঁছেছে। সেখান থেকে দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারীদের নিয়ে যাওয়ার তৈরি আছে এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। বাড়তি এনডিআরএফ দল নিয়ে হিন্দোন বিমানবন্দরে একটি সি১৩০ এবং দুইটি এএন৩২ অবস্থান করছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এরপর এক টুইটে মোদি লিখেছেন, গোটা দেশ উত্তরাখণ্ডের পাশে রয়েছে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।