বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ, ১৪৩১
এইচ এম হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)।।
সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পুরনো ভবনটি। সেখানে ছাদ থেকে খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেরিয়ে এসেছে মরিচা ধরা লোহার রড। বিমের অবস্থাও খুব দুর্বল। বিম ফেটে রড বেরিয়ে গেছে। এতে যে কোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কে থাকছেন রোগী, নার্স ও চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ১৯৫০ সালে ৫৬ শতাংশ জমি নিয়ে মহিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্টিত হয়। প্রথম দিকে টিন সেডের ঘর ছিল। ১৯৯৫ সালে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদফতর দ্বিতল ভবনটি নির্মান করে। কিন্তু ২৭ বছরের পুরনো হাসপাতাল ভবনটি এখন খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
হাসপাতালে গুরুত্বপুর্ন শুন্য পদ গুলো হলো-এফ পি আই-১, আয়া-১, পিয়ন-১, (ফার্মাঃ)-১, এফ ডব্লিউ এ – ৬ জন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবনটি নির্মানে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করায় মাত্র ২৭ বছরের মধ্যেই এটি জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। ভবনের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ছাদ ও বারান্দার পিলার গুলো ঢালাই খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। এর পেছনের জানালা গুলো ভাঙা চোড়া। সামনে দড়জা-জানলার একই অবস্থা। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মালামালসহ ওষুধপত্র। এই জড়াজীর্ন ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে নিভৃত পল্লী গ্রামের সাধারন মানুষকে চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। ভবনটিতে চিকিৎসাসেবা তো দূরের কথা এখন ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা। সেই সাথে রয়েছে জনবল সঙ্কটে। এখানে প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীরা মনে করছেন, পুরনো এ ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। বর্তমানে ভবনটির অবস্থা আরো নাজুক।
কামাল হোসেন নামে এক রোগী বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে আরো ভয়ের মধ্যে আছি। কখন আবার ভবন ধসে পড়ে এমন ভয় সবসময় কাজ করে।
আরেক রোগীর সাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা হাসপাতালে আসি সুস্থ হওয়ার জন্য, কিন্তু হাসপাতালে এসে যদি ভয়ের মধ্যে থাকতে হয় তাহলে কিভাবে নিশ্চিন্তে চিকিৎসা নেবো।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে তারা নিজেরাই আতঙ্কে থাকেন- কখন না ছাদ ধসে পড়ে। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রুমের বাইরে মেঝেতে বসে চিকিৎসা দেই। তারপরও মনে ভয় কাজ করে। হাসপাতালের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে থাকেন। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটি সংস্কার না করলেই নয়।
মহিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্মরত চিকিৎসক ডা. সুদেব কুমার পাল বলেন, হাসপাতালের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা চিকিৎসকেরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে এজন্য ওই হাসপাতালে চাকরি করতে ভয় করছে।