শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ, ১৪৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ধারাবাহিক বিক্ষোভের অংশ হিসেবে আবারও রাস্তায় নেমে এসেছে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ধরতে বাড়িতে বাড়িতে রাতভর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান সত্ত্বেও রবিবার (০৭ মার্চ) সকাল থেকেই দেশজুড়ে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন সেনাবাহিনী নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিসহ বেসামরিক সরকারের শীর্ষ নেতাদের আটক এবং রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে অচলাবস্থার সূচনা হয়। প্রাত্যহিক বিক্ষোভ ও অবরোধের কর্মসূচির কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশ রুদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অচল হয়ে গেছে দেশটির দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের হাতে অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এরপরও বিক্ষোভকারীরা প্রতিদিনেই রাস্তায় নামছেন এবং গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তিসহ গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
রবিবার জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শান অঞ্চলের লাশিও শহরে অভ্যুত্থানবিরোথী বিক্ষোভে জড়ো হওয়া মানুষকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ও বিকট শব্দ উৎপন্নকারী স্টান গ্রেনেড ছুঁড়ছে। এছাড়া একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মন্দিরের জন্য বিখ্যাত ঐতিহাসিক বাগান শহরে বিক্ষোভকারীদের দমন করতে পুলিশ গুলিবর্ষণ করেছে। তবে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে নাকি সরসারি প্রাণঘাতী তাজা গুলিবর্ষণ করেছে- তা নিশ্চিত নয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া আরও অর্ধডজন শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলছে। এতে দেশটির হাজার হাজার সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছেন।
এদিকে একটি ভিডিও ফুটেজের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত সপ্তাহে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে নিহত বিক্ষোভকারীদের স্মরণে দুই মিনিট নীরবতা পালন করেছে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের আন্দোলনকারীরা।
এর আগে শনিবারও মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ হয়। ইয়াঙ্গুনের সানচাং এলাকায় একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে সেখানে কোনও বিক্ষোভকারীর হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানায় রয়টার্স।