শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মুখ দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিয়ে এইচএসসি পাস করেছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বল। জিপিএ ৪.৫৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের বালারহাট আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উজ্জ্বল। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বল উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের হযরতপুর গ্রামের হতদরিদ্র চাষি জাহিদ সারোয়ারের ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
জন্মের পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার বেড়ে ওঠা। নিজ বিছানাকে শ্রেণিকক্ষ বানিয়ে দিনরাত মুখ দিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টিয়ে পড়াশোনা করতেন তিনি। শুধু তাই নয়, মুখ দিয়ে মোবাইল ফোন চালিয়ে অনলাইনে ক্লাসও করেছেন। শারীরিক প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বলের অভাবনীয় এমন সাফল্যে খুশি তার পরিবার, কলেজের শিক্ষক ও পাড়া প্রতিবেশীরা।
উজ্জ্বলের বাবা জাহিদ সারোয়ার বলেন, এসএসসি পাস করার পর উজ্জ্বলকে বালারহাট কলেজে ভর্তি করে দিই। করোনার কারণে অটোপাস দেওয়ার খবরে তার মন খারাপ ছিল। তার ইচ্ছা ছিল পরীক্ষা দিয়েই সে এইচএসসির বাধা পার করবে। সশরীরে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত শুনে সে খুশি হয়েছিল। বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অটোরিকশায় শুয়ে সে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়া-আসা করত। পরীক্ষার হলে বিছানায় শুয়ে মুখ দিয়ে কলম চালিয়ে সবগুলো পরীক্ষা দিয়েছে উজ্জ্বল। সে পরিবারের বোঝা না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে চায়। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বল বলেন, মুখ দিয়ে লিখতে আমার বেশ কষ্ট হয়। তবে সব প্রতিকূলতাকে হারিয়ে আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই।
মিঠাপুকুরের বালারহাট আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. আলাউদ্দিন বলেন, প্রতিবন্ধী হওয়ার স্বত্বেও লেখাপড়ার দিকে মেধাবী উজ্জ্বলের খুবই আগ্রহ। সে যে ফল এনেছে তা অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীও করতে পারেনি।পরীক্ষার কেন্দ্রে শুয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বোর্ড থেকে অনুমতি নেয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। আমরা চাই প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে সে জীবনে ভালো কিছু করুক।