শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী (বরিশাল)।।
বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে অবহেলিত জনপদ কৃষ্ণপুর। এই গ্রামের ১৫ হাজার লোকের বসবাস। এলাকার অধিকাংশ জনগণই কৃষির উপর নির্ভরশীল। নুন আনতে পানতা ফুরায় অধিকাংশ পরিবারের। চারিদিক জয়ন্তী, ছৈলা ও আড়ীয়াল খাঁ নদী দ্বারা বেষ্টিত। গ্রামটিতে ইটের পাকা রাস্তার চেয়ে মাটির রাস্তার পরিমাণ বেশী।
অধিকাংশ লোকে পায়ে হেটেই স্কুল ও বাজারে যেতে হয়। ১৫ হাজার লোকের এলাকায় যাতায়াতের জন্য ২টি অটোভ্যান রয়েছে। অসুস্থ্য রোগীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য উপজেলা সদরে আনতে ৫/৬ মাইল কাঁধে করে খেয়াঘাট আনতে হয়। রবি শস্যের জন্য এলাকাটি উপজেলার মধ্যে অন্যতম। ভালো রাস্তা না থাকায় ফসল ঘরে তুলে নিতে কৃষকদের হিমশিম খেতে হয়। slot88
অধিকাংশ ব্রিজ ও সাঁকো ঝুকিপূর্ণ। বেপারী বাড়ির সামনের সাঁকটি খুবই ঝুকিপূর্ণ। এ সাঁকো পাড় হতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড় হতে হয়। কয়েকবার পথচারি সাঁকো পাড় হতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে হাত-পা ভেঙ্গে গেছে। ৫-৬ বছর আগে এ খালের কালভাট ভেঙ্গে গেলে সাঁকোর ব্যবস্থা করা হয়। সে সাঁকো পাড় হওয়ার সময় পা ফসকে নিচের পাটাতনের উপর পড়ে গুরুতর আহত হন পথচারীরা।
কৃষ্ণপুর গ্রামবাসীর ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার জন্য সৈয়দা শাহাজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এলাকার ছেলে-মেয়েরা যাতে শিক্ষিত না হয় সেজন্য বিদ্যালয়টি সরানোর চেষ্টা করছেন কিছু স্বার্থন্বেষী মহল। নির্বাচন আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটির স্থানে ব্রিজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনের পর সে কথা আর কেউ রাখে না।
এলাকার সাবেক মেম্বার নুরুল হক বেপারী বলেন, কৃষ্ণপুুর, চর আবুপুর, ডুমুরীতলা ও উত্তর গাছুয়া এ চারটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের জন্য ঝড়-বৃষ্টির সময় নিরাপত্তার জন্য কোনো সাইক্লোন শেল্টার কিংবা বড় ভবন নেই। অভাব অনটনের পরিবারের গ্রামটি বাল্যবিবাহে ছয়লাভ। মেয়ে একটু বড় হলেই বাবা-মা বিয়ে দিয়েই দায়মুক্ত হতে চান। পানির অপর নাম জীবন হলেও এখানে পানির অপর নাম মরণ। বিশুদ্ধ পানির অভাবে বিভিন্ন রোগ বালাই লেগেই রয়েছে। ৭-৮টি বাড়ি মিলে ১টি গভীর নল কূপের ব্যবস্থা থাকলেও তা এক এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির দূরত্ব অনেক। slot thailand
কৃষ্ণপুর গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য রাশেদ মাতুব্বার বলেন, এলাকার জনগণের চলাচলের জন্য সাঁকোটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকার জনগণের চিকিৎসার জন্য কোন কমিউনিটি ক্লিনিক বা হাসপাতাল নেই। চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে যেতে হয় ব্যাপক খরচ ও ঝুঁকি নিয়ে। শাহজাহান বেপারীর বাড়ির সামনে ব্রিজটি ভেঙ্গে কয়েক বছর ধরে ঝুলে আছে সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ।
কৃষি ক্ষেত্রে গ্রামটি খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। সয়াবিন তেল, সরিষা তেল, তিল তেল, মুশুরি, খেসারি ও মুগ ডালসহ বিভিন্ন রবি শষ্যের ব্যাপক চাষ হয়ে থাকে। যা এলাকার চাহিদা পূরণ করে থাকে। এলাকাবাসীর দাবী উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ যদি অবহেলিত গ্রামটির দিকে নজর দেন, তাহলে গ্রামটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।