সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী বরিশাল।
মুলাদী উপজেলায় তেরচর গ্রামে আমন মৌসুমের ধান কাটার পর মাড়াই শেষে খড় দিয়ে গাদা (নারাপালা) তৈরির রেওয়াজ বহু আগের। কয়েক বছর আগেও জমির মালিকেরা এসব খড় মানুষকে বিনা মূল্যে দিয়ে দিতেন। এখন সময় বদলে গেছে। খড়ও হয়েছে মূল্যবান বস্তু। শুষ্ক মৌসুমে মাঠে ঘাস না থাকায় এখন খড়ের চাহিদা ব্যাপক। তাই এখন আর কেউ খড় বিনা মূল্যে দিতে রাজি নন। ফলে ধান কাটা শেষে এখন কৃষকদের মধ্যে খড় বিক্রির ধুম পড়েছে।
উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমন মৌসুমের ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। এখন ধান বিক্রির চেয়ে খড় বিক্রির প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেশি। দ্রুত কাঁচা খড় বিক্রি করা গেলে বাড়তি আয়ের সুযোগ পাবেন কৃষকগণ।
উপজেলার ভাঙ্গারমোনা গ্রামের কৃষক শাহদাত বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও আমরা খড় মানুষকে ফাও দিয়ে দিতাম। এখন আর কেউ ফাও চাইলে দিই না। ধান দিতে রাজি আছি কিন্তু খড় দিতে রাজি নই। খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা ধান চাষেও লাভবান হচ্ছি।’
মুলাদী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড চাষি আবদুল লতিফ হাওলাদার বলেন, ‘ধান তো পরেও বিক্রি হবে। কিন্তু খড় যত কাঁচা, তত দাম বেশি। তাই ধান ঘরে রেখে খড় আগে বিক্রি করছি।’
এখন ধান বিক্রির চেয়ে খড় বিক্রির প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেশি। প্রতি মুডা ২৫-৩০ টাকা ক্রয় করতে হয়। ধান মৌসুমে খড় সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করি যা বর্ষা মৌসুমে গরুর জন্য খাদ্য হিসেবে রেখে দেই।
কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক ইমরান বলেন, ‘আগে আশপাশে খালি জমি ছিল। ঘাসের অভাব ছিল না। এখন জমি পড়ে থাকে না। ঘাসের জমির অভাব, তাই খড়ের দামও বেড়ে গেছে। বাজারে গরুর খাবারের দাম বেশি। আমার ছয়টি গরু আছে। এর মধ্যে একটি দুধেল গাভি। প্রতিদিন ৩০-৩৫ আটি খড় লাগে।’ এ দিকে শ্রমিকের আকাল, শ্রমিক পাওয়া যায় না। শ্রমিকের অভাবে পরিবারের ছোট ছোট সদস্যদের নিয়ে খড় সংরক্ষণের চেষ্টা করি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলায় গবাদিপশু আছে প্রায় ৬০ হাজার। কৃষকেরা বাজার থেকে কেনা গোখাদ্যের চেয়ে ধানের খড়কে বেশি গুরুত্ব দেন। গাভির জন্য খড় খুবই উপকারী। গোখাদ্য হিসেবে খড়ের অনেক চাহিদা আছে।