বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী (বরিশাল) ।।
বরিশালের মুলাদী উপজেলায় মুলাদী সদর ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৮১ সালে নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন কে. এম. জাহিদুল ইসলাম। পিতা আলী আশরাফ খান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও মাতা মোসাঃ মাকসুদা বেগম আদর্শ গৃহিনী। ৩ (তিন) ভাইদের মধ্যে তিনি বড়। ছাত্রজীবন থেকেই প্রতিভার বিকাশ ঘটান তিনি।
নিজ বাড়ীর সামনেই চরলক্ষ্মীপুর সিনিয়ার মাদ্রাসায় ছাত্রজীবন শুরু। সেখান থেকে ১৯৯৭ সালে দাখিল (এসএসসি) ও মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা থেকে ১৯৯৯ সালে আলিম (এইচএসসি) পাশ করেন। ২০০৬ সালে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল থেকে এমবিবিএস পাশ করেন।
২০০৮ সালে ইন্টার্নশিপ শেষ করে নিজ উপজেলা মুলাদীতে আল-রাজী ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (প্লে থেকে ৮ম শ্রেণী) পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং বর্তমানে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৮ সালে নিজ উপজেলায় স্বাস্থ্য-সেবামূলক প্রতিষ্ঠান মুলাদী ফেয়ার ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারমান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং বর্তমানে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১২ সালে ৩০তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) যোগদান করে নিজ উপজেলা মুলাদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার আর, এম, ও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালে বরিশাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে স্বাস্থ্য-সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েল সিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পি.জি. হাসপাতাল) থেকে অর্থোপেডিক সার্জারি বিষয়ে এম.এস. উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বরিশালে অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগে রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৯ সালে মেডিসোর্স ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ডাঃ কে. এম. জাহিদুল ইসলাম স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজে রয়েছে তার নিবিড় অংশগ্রহণ। জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন “ফুলকুঁড়ি আসর” এর বিভাগীয় পরিচালক ছিলেন, দীর্ঘসময় বরিশাল বেতারে উপস্থাপক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। মেডিকেলে অধ্যয়নকালীন সন্ধানী ক্লাবে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন ও সৃজনী নামক একটি সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদনা করেন। বরিশালে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মঞ্চ নাটক ও পথ নাটকের নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নবম ও দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিষয়ের বই গ্রন্থনা করেন। বরিশালের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক পরিবর্তনে “ডা. জাহিদ’স প্রেসক্রিপশন” নামে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি ইসলাম, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্যের উপরে গবেষণা ও বিভিন্ন সময়ে বই রচনা ও গ্রন্থনা করেছেন। তিনি স্বাস্থ্যের উপর “ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন”-১, বই লিখেছেন। এছাড়াও আমার ডায়েরি ও সর্বশেষ লেখা “যে নামাযে আল্লাহ খুশি হন”, ৪৪৮ পৃষ্ঠার বইটি পাঠক সমাজে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সে বইটি তিনি মুলাদী প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক, নয়া দিগন্ত পত্রিকা, সাপ্তাহিক গণবার্তা ও রূপালী বার্তা অন-লাইনের মুলাদী প্রতিনিধি মোঃ নজিবুর রহমান ভূঁইয়া কামালকে উপহার দেন।
বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ক্বারী ওয়ালিউল্লাহ হুজরের নামে ‘ক্বারী ওয়ালিউল্লাহ ইসলামিক পাঠাগার ও কুরআন রিসার্চ সেন্টার’ নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিউরণ মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও নিউরণ গ্রুপের প্রেসিডেন্ট।
ডাঃ কে. এম. জাহিদুল ইসলাম সম্পর্কে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ ও শিশু বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ডাঃ কে. এম. জাহিদুল ইসলাম আজ সকলের দৃষ্টি কেড়েছেন। তিনি গ্রামের মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে আজ ডাক্তার, লেখক ও উপস্থাপক। এটা তার একান্ত চেষ্টার ফল। আমি মনে করি কে কোথায় লেখাপড়া করেছে তা বিষয় নয় বরং সেখানে বসে লেখাপড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে কিনা সেটাই আজ বিষয়। তার প্রমাণ ডাঃ কে. এম. জাহিদুল ইসলাম।
ডাঃ কে. এম. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁর এই সমস্ত কাজের একান্ত সহযোগী ও অনুপ্রেরণায় তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী বিশিষ্ট গাইনী ও প্রসূতী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী তৌকিয়া রহমান এবং তাঁর কন্যাদ্বয় তামজিদা বিনতে জাহিদ (জারিয়া) ও জুনায়রা বিনতে জাহিদ (রাদিয়া)।