শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী (বরিশাল)।।
বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার মুলাদী-মৃধারহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার উত্তরাঞ্চলের পাঁচ ইউনিয়নের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। সড়কটি চরডিক্রী মাদরাসা থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত অবস্থা বেশি খারাপ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, মুলাদী-মৃধারহাট প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক। এই সড়ক দিয়ে উপজেলার উত্তর অঞ্চলের গাছুয়া, চরকালেখান, বাটামারা, নাজিরপুর ও সফিপুর ইউনিয়নের এলাকবাসীসহ মুলাদী বন্দরের ব্যবসায়ী, মুলাদী সরকারী মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, মুলাদী সরকারী কলেজের ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়। তাদের সড়ক পথে যোগাযোগের জন্য একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক। এই ১০ কিলোমিটার সড়ক দুই অংশে ভাগ করে ধাপে ধাপে সংস্কার করে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বর্তমানে চরডিক্রী মাদরাসা থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে চরডিক্রী রাড়ী বাড়ি মোড়, গ্রামীণ ফোনটাওয়ার, বেলতলা, সাতানিকাচারি, ঢালীবাড়ি, মিয়ারহাট, মাস্তান বাজার, বাঁশতলা, রমজানপুর এলাকায় বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে লেগুনা, অটোরিকশা, অটোভ্যান চলাচল করছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন যাত্রীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি দুই অংশে ভাগ করে সংস্কার করায় সারা বছরই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এক অংশের খানাখন্দ সংস্কার হলে অন্য অংশের খানাখন্দ রয়ে যায়। এক সঙ্গে সংস্কার করা হলে মানুষ স্বস্তিতে চলাচল করতে পারতো।
চরকালেখান গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, মুলাদী থেকে বাটামারা খেয়াঘাট, সফিপুর খেয়াঘাট, মৃধারহাট, মাদরাসা বাজার, সোনামদ্দিন বন্দর, পদ্মারহাটসহ উত্তরাঞ্চলের সকল স্থানে যাতায়াতের জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়।
চরকালেখান ইউনিয়নের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, মুলাদী থেকে চরডিক্রী মাদরাসা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক এক ধাপে সংস্কার করা হয়। আবার চরডিক্রী মাদরাসা থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক আরেক ধাপে সংস্কার করে এলজিইডি। গত বছর মুলাদী সিনেমাহল বাসস্ট্যান্ড থেকে চরডিক্রী মাদরাসা পর্যন্ত সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু মৃধারহাট থেকে চরডিক্রী মাদসার পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এই পথে রোগী নিয়ে যাওয়ার সময়ই আধামরা হয়ে যায়।
গাছুয়া ইউনিয়নের পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, মৃধারহাট-মুলাদী সড়কটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি চলাচল করতে অসুবিধা হয়। বিশেষ করে রোগী এবং বয়স্কদের খুবই কষ্ট হয়। এছাড়া সময়ও বেশি লাগে।
অটোরিকশা চালক বেল্লাল হোসেন বলেন, মুলাদী থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত যেতে ৩০/৩৫ মিনিট সময় লাগে। সড়কটি সংস্কার করা হলে সময় লাগবে ১৫/২০ মিনিটে। এ ছাড়া ভাঙা সড়কে চলাচল করায় মাসের মধ্যে ২/৩ বার অটোরিকশা মেরামত করতে হয়।
সড়ক সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে মুলাদী-মৃধারহাট সড়কের ৩ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। আরও ২ হাজার ৬৫৫ মিটার সংস্কারের দরপত্র দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে বাকী সড়ক সংস্কারের কাজ করা হবে।