শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
জিনের বাদশাহ পরিচয়ে প্রতারণাই পেশা ছিল জাকির হোসেন বাচ্চুর (৩৮)। প্রতারণার উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে আরজু আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ফোনালাপ থেকেই তাদের প্রেম, এক পর্যায়ে বিয়ে।
বিয়ের পর আরজু আক্তারকেও প্রতারণায় সঙ্গী করেন বাচ্চু। আরজু আক্তারের সঙ্গে বসবাস করলেও পরকীয়ায় আসক্ত জাকির প্রতারণায় উপার্জিত সব অর্থ ব্যয় করতেন অনৈতিক কাজে। এ নিয়ে মনোমালিন্য থেকে একপর্যায়ে আরজুকে তালাক দেন জিনের বাদশাহ পরিচয় দেওয়া বাচ্চু। তালাক হলেও তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মতোই সম্পর্ক ছিল, প্রায়ই একসঙ্গে বসবাস করতেন। তবে পরকীয়া ও তালাকের প্রতিশোধ নিতে বাচ্চুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আরজু আক্তার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী লঞ্চে ভোলা যাওয়ার পথে কেবিনে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাচ্চুকে হত্যা করেন আরজু।
২৯ জুলাই সদরঘাট এলাকায় এমভি গ্রিন লাইন-৩ লঞ্চের স্টাফ কেবিন থেকে জাকির হোসেন বাচ্চুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ জুলাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত বাচ্চুর প্রথম স্ত্রী সুরমা আক্তার।
১ আগস্ট মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) ভোরে সাভারের নবীনগর এলাকায় ঢাকাগামী একটি বাস থেকে আরজু আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই দিনই আদালতে আরজু আক্তার ১৬৪ ধারায় হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বুধবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
তিনি বলেন, জাকির হোসেন বাচ্চুর বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দীনে। সেখানে তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা থাকতেন। জিনের বাদশাহ পরিচয়ে প্রতারণা করে আসা বাচ্চু দুই বছর আগে একদিন কল দেন আরজু আক্তারকে।
জিনের বাদশাহ পরিচয়ে দেওয়া সেই কল থেকেই প্রেম। এরপর বিয়ে। ঢাকার একটি ভাড়া বাসায় দ্বিতীয় স্ত্রী আরজুর সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন বাচ্চু। বিয়ের পর আরজু জানতে পারেন তিনি বাচ্চুর দ্বিতীয় স্ত্রী। এ ছাড়াও বাচ্চুর একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।