রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
জাকিরুল আহসান।।
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট থানার ৬নং বিদ্যানন্দনপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে চর খাজুরিয়া গ্রাম। এলাকায় এটি ছোট চর খাজুরিয়া গ্রাম নামেও পরিচিত। গ্রামের অর্ধকিলোমিটারের একটি রাস্তা মৃত: কাদের মাষ্টার বাড়ির সামনে দিয়ে চলে গেছে। গ্রামটির ৫ শতাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এটি। গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর ভাষাণচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবারুণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভাষাণচর বিদ্যানন্দপুর মহাবিদ্যালয়ে যেতে লাগে এই রাস্তা। এছাড়া দফাদার বাজার, নতুনবাজার ও লঞ্চঘাটে যাওয়ার পথও এটি।
অথচ জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার বেহাল দশা দেখলে মনে হবে না, এই গ্রামে কোন জনপ্রতিনিধি আছেন। এখানকার বাসিন্দারা বলছেন, মেম্বার চেয়ারম্যানদের কাছে বলতে বলতে হয়রান, এখন আর তারা রাস্তার সংস্কারের জন্য আবেদনও করেন না। কারণ গত একযুগ ধরে কতশতবার রাস্তার জন্য বলা হয়েছে তার কোন হিসেব নেই, কিন্তু কোন ফল পাননি। তারা জানান, আশপাশের রাস্তা সংস্কার হয়, পাকা হয়, কিন্তু কাদের মাস্টার বাড়ির সামনের রাস্তা কাঁচাও হয় না।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদক কথা বলেন গ্রামের বেশ কয়েকজন ব্যাক্তির সঙ্গে। তারা বলেন, রাস্তার অবস্থা এক কথায় বেহাল, জনপ্রতিনিধিরা আছেন অন্য এলাকা নিয়ে, এই রাস্তা নিয়ে তাদের কোন খোঁজ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা বজলু সরদার বলেন, রাস্তাটির সংস্কার করা হয়নি, সেই আগের মতোই বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
নাম প্রকাশে এক কলেজ ছাত্র বলেন, রাস্তাই তো নেই, বর্ষার দিনে তো হাটাও যায় না। এমন অবস্থা হয় যেন চাষ দেয়া ধানক্ষেতে হাটছি। কোন পরিবহণ চলতে পারে না। ভারী বস্তা কিংবা বাজার মাথায় নিয়ে হাটতে হয় এই অর্ধকিলোমিটারের পথ। আর বয়স্করা বের হলে সঙ্গে নাতি বা কাউকে যেতে হয়, যাতে পড়ে গিয়ে আহত না হন।
ইউপি মেম্বার শাহ আলম মাতুব্বর বলেন, রাস্তাটি মেরামতের চেষ্টা করেছি, কিছু কিছু অংশে মেরামত করাও হয়েছে। আর ফকিরবাড়ির সামনের অংশ যেখানে বেশি ভাঙ্গা সেখানে মেরামতের জন্য চেষ্টা করা হয়, কিন্তু লোকজন মাটি কাটতে বাঁধা দেয়ায় মেরামত করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ইউপি নির্বাচনের আগে রাস্তার সংস্কারের কোন কাজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, নির্বাচনের পরে আবার দেখ যাবে।
সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার মোসা. খাদিজা বেগম বলেন, রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রতিবারই মাটি কাটাতে যাই। কিন্তু খাল অনেক গভীর হওয়ায় মাটি কাটা সম্ভব হয় না। এজন্য পাশে যাদের জমি থেকেই মাটি নিতে যাই সে-ই বাঁধা দেয়, বলে যে গাছ পড়ে যাবে। গত বছরও মাটি দিয়ে রাস্তাটি মেরামতের চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাশের লোকজন মাটি নিতে গেলেই বাঁধা দেয়। আর রাস্তার ফান্ডের বিষয়েও কিছু জানি না। গতবার চেয়ারম্যান আমার স্বাক্ষর নিছে বলছে ‘আমার নামে রাস্তার কাজ হবে, পরে আমাকে দিয়ে করানো হয়নি, শুনেছি চেয়ারম্যান নিজেই করছে’।
গত একযুগেও রাস্তাটিতে জনপ্রতিনিধিরা কোন নজর পড়েনি, শুধুমাত্র ভোটের সময় আসেন পরে কোন খবর রাখেন না- এলাকাবাসীর এমন অভিযোগ আছে জানালে ৬নং বিদ্যানন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. জলিল মিয়া বলেন, রাস্তাটির কিছু অংশ মেরামত করা হয়েছে। আর ফকিরবাড়ির সামনের ভাঙ্গা অংশ কালকে (বুধবার ০৩ ফেব্রুয়ারি) দেখতে যাবো, পরেরবার করে দেব বলেই তড়িগরি করে ফোন কেটে দেন চেয়ারম্যান।