শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১
কামরুল আহসান হাসান।।
বৃদ্ধাশ্রম হলো মূলত বৃদ্ধ নারী-পুরুষের আবাসস্থল। যেখানে বৃদ্ধদের আলাদা আলাদা রুমে রাখা হয়। ভবনের মধ্যেই তাদের দেয়া হয় খাবার, চিত্তবিনোদন এবং অসুস্থতাজনিত সেবা। কিন্তু সেখানে থাকে না খুব কাছের আত্মীয়-স্বজন বা ছেলে-মেয়ে। অথচ শেষ বয়সে যাদের সান্নিধ্য পাওয়া খুবই জরুরী। কেন বৃদ্ধরা তাদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার তথা আশ্রয় এবং বাসস্থন থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন? বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে রূপালী বার্তার তিন পর্বের ধরাবাহিকের শেষ পর্ব।
লোভী পরিবারে ছেলে বা মেয়ে বিয়ে দিলে যা হয়- ছেলেকে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সবাই মিলে আয়ত্তে নেয়ার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠেন। তাদের ভাবনা এমন হয় যে, ছেলে বাবা-মায়ের প্রতি বেশি আসক্ত হলে তার কণ্যা সুখে থাকবে না। আসলে সুখ-দুঃখ সৃষ্টির দয়া বা অনুগ্রহ থেকে আসে। তবে ভারসাম্যপূর্ণ হক আদায়ে ছেলে সচেতন হলে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা হবার সম্ভাবনা থাকে না।
অন্যদিকে লোভী পরিবারে মেয়ে বিয়ে দিলে শ্বশুর বাড়ী থেকে চলে আসে চরম নির্মমতা। সামাজিক স্ট্যাটাস রক্ষার নামে আধুনিক পরিভাষায় নেমে আসে যৌতুক নামের কলঙ্ক। অতিমাত্রায় লোভ তাদের এতই নিচে নামিয়ে ফেলে শরীরে আঘাত দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। একটা পর্যায় নির্বোধ ছেলের বোধদয় হলে বাবা মা থেকে আলাদা জীবনযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এ থেকে শুরু হয় বাবা মা থেকে দূরত্ব। তবুও কিছুটা হলেও শান্তি বজায় থাকে। কিন্তু ছেলে যদি চৌকশ না হন, তবে পরিণতি বয়ে নিয়ে যায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার দিকে।
লোভ এমন এক দুরারোগ্য ব্যাধি, যা কাউকে পেয়ে বসলে সমাজের ঘৃণিত স্তরে না নামিয়ে ছাড়ে না। এই লোভ সন্তান থেকে বাবা, মা, ভাই, বোন ও স্ত্রী পরিবার পরিজন থেকে আলাদাই করে না, বিষিয়ে তোলে পুরো পরিবার, অস্থির করে তোলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন। এহেন সমস্যা দূরীকরণে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও মুখ্য ভূমিকা পালনের দায়িত্ব সুপুরুষ চরিত্রের ছেলের। যে সবার চোখে সমান ও যার যার ন্যায্য অধিকার অনুযায়ী হক আদায়ে সচেষ্ট হবেন ও স্রষ্টা-ই হবে তার জবাবদিহিতার একমাত্র লক্ষ্যস্থল।
(প্রিয় পাঠক বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে আজ প্রকাশিত হলো তৃতীয় ও শেষ পর্ব। লেখাটি ভালো লাগলে লাইক দিন, শেয়ার করুন…রূপালী বার্তার সঙ্গেই থাকুন)