শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
দিদি হিসেবে ১০ বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। কিন্তু মমতা শুধু একজন ভাইপোর পিসি হয়ে রয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেন, ১০ বছর পর মানুষ জবাব চাইছে। দিদি হিসেবে আপনাকে বেছে নিয়েছিলেন সবাই। কিন্তু আপনি নিজেকে শুধু ভাইপোর পিসি হিসেবেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছেন। খবর আনন্দবাজার ও ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের
রোববার (০৭ মার্চ) বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ঐতিহাসিক ব্রিগেড সমাবেশ করল বিজেপি। ভরা ব্রিগেড দেখে ভাষণের শুরুতেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মোদি। বলেন, মনে হচ্ছে যেন ২ মে এসে গেছে। একইসঙ্গে তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ স্লোগান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী সাফ হুঁশিয়ারি দেন, ‘বাংলায় এবার তৃণমূলের খেলা খতম’।
মমতা সরকারকে ‘বিশ্বাসভঙ্গকারীর’ সরকার বলে মন্তব্য করেন মোদি। চড়া সুরে বলেন, রাজ্যবাসী সোনার বাংলা চায়। প্রগতিশীল বাংলা, উন্নয়নের বাংলা চায়। আপনারা দিদির হাতে বাংলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বিশ্বাস ভঙ্গ হয়েছে। এখন বাঙালি কোমর বেঁধেছে। এবার আসল পরিবর্তন হবেই।
নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়েই ছাড়বেন। ব্রিগেড সভার শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দুর ঘোষণা যেখানে হুঁশিয়ারি ছিল, নরেন্দ্র মোদি সেখানে তাকে কটাক্ষের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। মোদি বলেন, ‘নন্দীগ্রামে মমতা স্কুটি থেকে পড়ে যাবেন, আঘাত পাবেন, তখন আমাদের করার কিছু থাকবে না’।
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ই-স্কুটি চেপে মমতার নবান্ন যাওয়াকে নন্দীগ্রামের সঙ্গে জুড়ে দিলেন মোদি। বলেন, কিছু দিন আগে স্কুটি সামলাচ্ছিলেন দিদি। সবাই ভয় পাচ্ছিলেন, আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত না পান। ভাগ্যিস পড়ে যাননি। নইলে যে রাজ্যে স্কুটি তৈরি হয়েছে, সেই রাজ্যকেই শত্রু বানিয়ে ফেলতেন। তাই ভালো হয়েছে পড়ে যাননি। কিন্তু ভবানীপুর যেতে যেতে নন্দীগ্রামের দিকে কী করে ঘুরে গেল স্কুটি? আমি চাই না আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত পান। কিন্তু স্কুটি যখন নন্দীগ্রামেই গিয়ে পড়েছে, তখন আমরা আর কী করব।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তৃণমূলের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম গজিয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন মোদি। তিনি বলেন, ‘কখনও আমাকে রাবণ, কখনও দৈত্য, কখনও গুন্ডা বলছেন দিদি। এত রাগ কেন দিদি? আপনার দল এবং আপনার সরকারের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। গণতন্ত্রের নামে বাংলায় লুঠতন্ত্রকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, জাত-ধর্মের নামে বিভেদের রাজনীতি করেছেন, তাই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। দিদিকে অনেক দিন ধরে চিনি। বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়া দিদি এমন ছিলেন না। কিন্তু আজ দিদির রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে।’
মোদি বলেন, আজ বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী রয়েছেন আমাদের সঙ্গে। তার সংঘর্ষ এবং উত্থান সম্পর্কে সবাই অবগত। আজ পরিবর্তনের জন্যই এসেছে মানুষ।
তিনি আরও বলেন, বাংলার মানুষ দিদির ওপর ভরসা করেছিলেন। কিন্তু দিদি এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা সেই বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছেন। বাংলার মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন দিদি। মা-বোনেদের ওপর অকথ্য অত্যাচার হয়েছে। বাংলার মানুষ তবু ভেঙে পড়েনি। বরং পরিবর্তন চাইছে। বাংলার উন্নতি চাইছে।
মোদি এও বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এত বড় সভা দেখিনি। হেলিকপ্টার থেকে দেখছিলাম। ময়দানে জায়গা নেই। রাস্তায় লোক উপচে পড়ছে। মনে হয় না তারা পৌঁছতে পারবেন। সবাইকে প্রণাম জানাই। বাংলার মাটি থেকেই ভারতীয় সংস্কৃতির বিকাশ, বাংলার মাটি থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরু। বাংলার মহাপুরুষরা এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত ভাবনাকে মজবুত করেছিলেন।