শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
ধর্ম ও জীবন।।
প্রত্যেক কাজেই মধ্যম পন্থা অবলম্বন করার গুরুত্ব ইসলামে অনেক বেশি। যে কোনা কাজে বাড়াবাড়ি কিংবা ছাড়াছাড়ি ইসলামে কোনো স্থান নেই। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব কাজে মধ্যমপন্থা বজায় রাখার উপর জোর তাগিদ দিয়েছেন।
শারীরিক পরিশ্রমে, মস্তিষ্কের পরিচালনায়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে, পানাহারে, ঘুম ও বিশ্রামে, দুঃখ-কষ্টে, হাসি-খুশিতে, আনন্দ-উল্লাসে ও ইবাদত-বন্দেগিতে, চলাফেরা ও কথা-বার্তাসহ সার্বিক দিক থেকেই বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি না করে মধ্যমপন্থা বজায় রেখে কাজ করাই হাদিসের নির্দেশনা এবং মুমিনের অন্যতম গুণ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও সব কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতেন। তিনি উম্মতে মুহাম্মাদিকেও মধ্যমপন্থা বজায় রেখে এভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সচ্ছল অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা কতইনা সুন্দর! দারিদ্র্যের সময় মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা কতইনা ভালো! ইবাদত-বন্দেগিতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা কতইনা উত্তম!’ (মুসনাদে বাযযার, কানজুল উম্মাল)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কত সুন্দর হেকমতপূর্ণ ভাষায় সংক্ষেপে উম্মতে মুহাম্মাদিকে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের নসিহত পেশ করেছেন।
মুমিন মুসলমানের উচিত দুনিয়ার যাবতীয় কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। চাই তা ইবাদত- বন্দেগি হোক কিংবা দুনিয়ার জীবনের সংসার ধর্মের কাজ হোক কিংবা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের কাজ হোক। সুতরাং মধ্যমপন্থায় সব কাজ সহজে সম্পাদনে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এ দোয়া করা-
اَللَّهُمَّ اِنِّى أَسْألُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা; ওয়াত তুক্বা; ওয়াল আফাফা; ওয়াল গেনা।‘
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করি এবং আপনার ভয় তথা পরহেজগারি কামনা করি এবং আপনার কাছে সুস্থতা তথা নৈতিক পবিত্রতা কামনা করি এবং সম্পদ তথা সামর্থ্য কামনা করি। (মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদ)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত দুনিয়ার যাবতীয় কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। চাই তা ইবাদত- বন্দেগি হোক কিংবা দুনিয়ার জীবনের সংসার ধর্মের কাজ হোক কিংবা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের কাজ হোক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে হাদিসের নির্দেশনা মেনে আমল-ইবাদতসহ সব কাজ করার তাওফিক দান করুন। উত্তম জীবন-যাপন ও ইবাদত-বন্দেগিতে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।