শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
সাভারে পারিবারিক দ্বন্দ্বে আপন খালুর হাতে প্রাণ গেল আট বছর বয়সী শিশু রাজিয়ার। রবিবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাত দুইটার দিকে নিখোঁজের তিনদিন পর সাভারের ফুলবাড়িয়া জ্যাঘাত এলাকার একটি বিলের কচুরিপানার মধ্যে থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যাকারী শিশুটির খালু নাজমুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজিয়াকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে নাজমুল।
নিহত রাজিয়া সুলতানা (৮) রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবতি বিষ্ণুপুর এলাকার আব্দুল জলিলের মেয়ে। সে সাভারের তরফ রাজাঘাট এলাকায় সোহেলের বাড়িতে পোশাক শ্রমিক বাবা-মায়ের সাথে ভাড়া থাকতো। অন্যদিকে হত্যাকারী নাজমুল রংপুর জেলার পীরগাছা থানার চৌধুরানী এলাকার বাসিন্দা। তিনি নিহত রাজিয়ার আপন খালু।
থানা পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত নাজমুল ও রাজিয়া সুলতানাসহ তার বাবা-মা রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় ভাড়া থেকে পোশাক কারখানায় কাজ করতো। কিছু দিন আগে নাজমুল রাজিয়ার মায়ের একজোড়া কানের দুল বন্ধকের কথা বলে বিক্রি করে দেয়। সেই কানের দুলের জন্য তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হলে এক পর্যায়ে তা ফেরত দিতে বাধ্য হয় নাজমুল। পরবর্তীতে সে আবারো রাজিয়ার বাবার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার নেয়। সেই টাকা ফেরত চাইলেই ক্ষিপ্ত হয় নাজমুল। পরে গত ৯ জুলাই বিকেলে ধারের পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া কথা ছিলো। ওইদিনই কৌশলে নাজমুল কাউকে না জানিয়ে রাজিয়া সুলতানাকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে সাভারের তরফ রাজাঘাট এলাকার একটি বিলের পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে।
এদিকে রাজিয়াকে খোঁজাখুঁজি না পেয়ে তার বাবা শনিবার সাভার থানায় একটা নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাজমুলকে আটক করা হলে সে রাজিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তরফ রাজাঘাট এলাকার বিলের মধ্যে কচুরিপানার নিচ থেকে রবিবার রাত দুইটার দিকে নিখোঁজ রাজিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হেমায়েতপুর ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণ ডায়রির বিবরণ দেখে নিখোঁজ শিশুর খালু নাজমুল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যে রবিবার রাতে রাজাঘাট এলাকার একটি বিলের কচুরি পানার নিচ থেকে রাজিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, টাকার দ্বন্দে শিশুটিকে কৌশলে বিলের পাড়ে নিয়ে পানিতে চুবিয়ে খুন করা হয়। পরে তার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ওই বিলের কচুরি পানার নিচে রাখার কথা স্বীকার করেছে নাজমুল।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোঃ কামাল হোসেন বলেন, নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে শিশু হত্যার ঘটনায় নাজমুল হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।