বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১
স্মৃতিময় দিন
।।মাহফুজা রিনা।।
প্রিয় ক্যাম্পাস, সেই পদ্মপুকুর,
পুকুরে ঢিল ছোড়া, খোঁজে তোমাকে হয়তো আমাকেও।
আলাদা ডিপার্টমেন্ট,
তোমার ক্লাশ আগেই শেষ,
আমার ক্লাশের সামনে এসে অপেক্ষা করা,
পাশাপাশি হেটে বাড়ি ফেরা,
কখনও চুপচাপ কখনও প্রয়োজনীয় কথা বলা।
নীল শাড়ি পরতে হবে, উপলক্ষ জন্মদিন।
তুমি টিপ আনবে জন্মদিনের উপহার।
ছোট্ট একটা নীল টিপ ঠিক কপালের মাঝখানে
আয়না হলে তুমি।
আর একগুচ্ছ জংলি ফুল,
হ্যাঁ পথের ধারে অনাদরে ফুটে থাকা
একগুচ্ছ জংলি ফুল ভালবাসার অসাধারণ উপহার।
মেলায় যাব,
ভালবাসার দাবী
কাঠের কারুকার্যের মালা, ছোট্ট কানের দুল,
নীল টি-শার্ট।
কখনও পরন্ত বিকেলে রাস্তার পাশে হাটতে হাটতে চায়ের তৃষ্ণা,
ছোট্ট টং দোকানে মাটির কাপে চা খাওয়া,
শব্দ করে চুমুক দেওয়া,আহ্ পরম তৃপ্তি।
কোনও এক বিকেলে নদীর পারে পাশাপাশি হাটা,
বায়না নৌকা চড়বো,
নৌকা চলতে চলতে জল ছুঁয়ে খেলা করা,
তোমায় ভিজিয়ে দেওয়া।
অথবা তীর ঘেঁষে বসা,
বাতাসে অবাধ্য চুল গুলো এসে মুখে পড়লে সরিয়ে দেওয়ার ছলে
একটুখানি …ছোঁয়া।
রিক্সায় যেতে যেতে কথোপকথন, বিষয় পরীক্ষা,
ভাল হয়নি মৌখিক পরীক্ষা, খুব চিন্তিত, তুমি শান্তনা দিচ্ছ।
চলে গেল পাঁচটি বছর, তুমি নেই, চলে গেছো বহুদিন আগেই।
একদিন কোথাও যাচ্ছি একা, টুং টাং রিক্সার বেল পরছিল,
হঠাৎ রিক্সাওয়ালা বললো আপা, পাশ করেছিলেন ?
আমি অবাক, কি বলছে?
জিজ্ঞাসার চোখে তাকালাম, বললো মনে আছে অনেক বছর আগে
আমার রিক্সায় ছিলেন আপনি বলেছিলেন পরীক্ষা ভাল হয়নি।
সহসা দুফোটা অশ্রু এলো চোখের কোনে,
তুমি আজ বহুদূরে হায় কিছুই রাখোনি মনে।
মাথা নেড়ে বললাম হ্যাঁ পাশ করেছিলাম।
স্বপ্ন ছিল আজীবন পাশে থাকার
স্বপ্নগুলো ভেসে গেছে কোনও এক অমানিসার গাঢ় কালো অন্ধকারে,
দিগন্ত থেকে দিগন্তের ঐ দূরে, বহুদূরে, কতদূরে জানি না।