শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
রূপালী স্বাস্থ্য।।
শরীর ও মস্তিষ্কের শক্তির প্রধান উৎস হলো গ্লুকোজ বা চিনি। প্রতিদিনের খাবার ও পানীয় থেকে শরীর এই চিনি সংগ্রহ করে। পেটের ভেতর অগ্ন্যাশয় নামক গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়, যার কাজ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। হাইপোগ্লাইসেমিয়া শরীরের এমন একটি অবস্থা, যখন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওষুধ, কম খাদ্য গ্রহণ, মাত্রাতিরিক্ত ব্যায়াম হাইপোগ্লাইসেমিয়া করতে পারে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে নন-ডায়াবেটিক (যাদের ডায়াবেটিক রোগ নেই) রোগীদেরও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
উপসর্গ: প্রচণ্ড ক্ষুধা পাওয়া, দুর্বলতা, নিদ্রাহিনতা, মানসিক উদ্বিগ্নতা, মাথা ঘোরানো, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, খিটখিটে মেজাজ।
যেভাবে রোগ ধরা যায়: রোগের ইতিহাস, শারীরিক উপসর্গ এবং শারীরিক পরীক্ষা করে রোগ নিরূপন করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে রোগীর রক্তে চিনির পরিমাণ (গ্লুকোজ লেভেল) নির্ণয় করা হয়। তা ছাড়া দেখা যায় আক্রান্ত হওয়ার পর রোগী গ্লুকোজ বা চিনি খেলে সুস্থ বোধ করে। রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ ৫৫ মি.গ্রা/ডিএল অথবা ৩ মিলিমোল/লিটারের কম হলে তা হাইপোগ্লাইসেমিয়া নিদের্শ করে। ডাক্তাররা এটি ছাড়াও কারণ অনুযায়ী অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করে থাকেন।
চিকিৎসা-
# তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে চিনির শরবত খাওয়ানো (অজ্ঞান থাকলে শুধু চিনি খাওয়াবেন, শরবত নয়)
# একবারে বেশি করে না খেয়ে প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর অল্প অল্প সুষম খাবার গ্রহণ করা
# অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়া
# ডাক্তার দেখিয়ে যথাযথ কারণ অনুযায়ী আরো চিকিৎসা নেওয়া ও নিয়মিত ফলোআপে থাকা।
লো ব্লাড সুগারের কতগুলো সাধারণ উপসর্গ হলো: হাত কাপা, বুক ধড়পড় করা, ঘেমে উঠা, ক্ষুধা লাগা, অসারতা বা শিরশির করা, ঘুম ঘুম লাগা, বিরক্তিবোধ, মাথা ব্যথা। দ্বিধাগ্রস্থতা, চোখে ঝাপসা দেখা, কথা বলায় কষ্ট হওয়া, জ্ঞান হারানো।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা: দ্রুত সহজপাচ্য কার্বহাইড্রেট গ্রহণ করুন যেমনঃ আধা গ্লাস ফলের জুস পান করুন, ৫-৭টি জেলিবিন খান, ৩ চামচ মধু বা চিনি খান, গ্লুকোজের শরবত পান করুন যাতে কার্বহাইড্রেট ১৫ গ্রাম পাওয়া যায়।
তারপর ধীরে ধীরে আরো কিছু সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন যথাঃ একটি স্যান্ডউইচ, বিস্কুট বা কুকিজ, এক গ্লাস দুধ, যে কোনো একটি ফল, এর ১৫ মিনিট পর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করুন।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।