বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ, ১৪৩১
রূপালী স্বাস্থ্য।।
হার্নিয়া খুবই কমন একটি রোগ। জন্ম থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত যে কোন বয়সেই এই রোগ হতে পারে। পেটের মধ্যস্থ খাদ্যনালী বা অন্য যে কোনো অঙ্গ পেটের দুর্বল স্থান দিয়ে বাহিরে চলে আসাকে হার্নিয়া বুঝায়।
হারনিয়া কেন হয়-
আসলে পেট বা এবডোমেন ওয়ালের দুর্বলতাই হারনিয়ার একমাত্র কারণ। এই দুর্বলতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন-
১. জন্মগত
২. অপারেশন, আঘাত এবং ইনফেকশন ইত্যাদি।
উপসর্গ: প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীরা বলবে হাঁটা-চলা করলে, ভারী কিছু উঠালে কিংবা হাচি-কাঁশি দিলে আমার কুচকীর উপরটা গোলাকার বলের মত ফুলে উঠে এবং শুয়ে থাকলে এটা চলে যায়। মাঝে মাঝে শক্ত হয়ে যায় এবং ব্যথা হয়। কিছুদিন এভাবে চলার পর গোলাকার ফোলাটি ইসক্রুটামে (অণ্ডকোষ থলিতে) নেমে আসে এবং শুয়ে থাকলে আপনা আপনি পেটের ভিতর শব্দ করে চলে যায়। এভাবে ফোলাটি বড় হতে থাকে এবং মাঝে মাঝে চাপ দিয়ে ভিতরে ঢোকাতে হয়। তারপর ধীরে ধীরে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছুতে পারে যে এটি আর চাপ দিলে পেটের ভিতর ঢুকছে না। এই পর্যায়ে প্রচণ্ডব্যথা, বমি এবং পেট ফাঁপা ও পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থাকে অবস্ট্রাকটেড/স্ট্রাংগুলেটেড হার্নিয়া বলা হয়। এই অবস্থায় জরুরীভাবে অপারেশন না করলে জীবনমরণ সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসা: কুচকির মাঝামাঝি ১/২ ইঞ্চি উপরে হার্নিয়ার প্রাথমিক অবস্থান। অপারেশনই হচ্ছে এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা। ছোট এবং প্রাথমিক পর্যায়ে অপারেশন করানোই উত্তম। কারণ এতে খরচ কম। মেস লাগানো ছাড়া করা যায় এবং জীবনের ঝুঁকি কম।
অপারেশন না করলে যেসব অসুবিধা হতে পারে-
১. ধীরে ধীরে হার্নিয়ার আকার বড় হবে
২. চিকিৎসা করা কঠিন ও ব্যয়সাধ্য হবে
৩. বড় হার্নিয়ার ক্ষেত্রে মেস লাগানোর প্রয়োজন হবে
৪. অবস্ট্রাকটেড হার্নিয়া হলে ইমারজেন্সী অপারেশন লাগবে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়বে। অভিজ্ঞ সার্জন দ্বারা অপারেশন করিয়ে নিলে আবার হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তাই হারনিয়া হলে জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে অপারেশন করিয়ে নিন।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।