শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র, ১৪৩০
মো. রফিকুল ইসলাম, বাবুগঞ্জ।।
১৮ বছর ধরে সন্তানদের নিয়ে গণশৌচাগারে আছেন সুমন-সাথী দম্পতি। মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই না পেয়ে এখানেই আশ্রয় নিয়েছেন তারা। গণশৌচাগারে দেড়যুগ কেটে গেলেও সরকারি কোনো সহায়তা মেলেনি তাদের। তবে এবার স্বপ্ন দেখেছিলেন এই দম্পতি। মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীনদের জন্য ঘরের আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তবে সে আশাও গুরেবালি।
মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বরিশালের বাবুগঞ্জে ১৭০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ১১০টি পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এই তালিকায় ঠাঁই পায়নি সুমন-সাথী দম্পতির নাম। বাধ্য হয়ে এখনো আছেন গণশৌচাগারে।
জানা গেছে, ১৮ বছর পূর্বে মাদারীপুর জেলার কালকিনি থেকে জীবিকার তাগিদে বরিশালের বাবুগঞ্জে এসেছিলেন সুমন ও সাথী দম্পতি। ২০০৩ সালের দিকে জীবিকার তাগিদে স্বামীর সাথে বাবুগঞ্জ বন্দরে বসবাস শুরু করেন। পেশা হিসেবে সুইপারের (মেথর) কাজ করেন। এক যুগেরও বেশি সময় বাবুগঞ্জে বসবাস করলেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার মাহমুদ, সমাজসেবক আতিকুর রহমান ও ওসি মিজানুর রহমানের সহযোগিতায় করোনা মহামারির প্রথম ধাপে কিছু খাদ্যসহায়তা ও আর্থিক সহায়তা ছাড়া জোটেনি তেমন কোনো সহযোগিতা।
এবারো জুটলো না নতুন ঠিকানা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাথীর আকুতি, পাঁচ সন্তান নিয়ে মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, পঙ্গু স্বামী আর পাঁচ সন্তান নিয়ে কোনো রকম মানবেতর জীবন যাপন করছেন সাথী। মাথা গোঁজার নিজস্ব কোনো ঘর না থাকায় বাবুগঞ্জ বন্দরের গণশৌচাগারের সেফটি ট্যাংকের ওপরে বসতি গড়েছেন তিনি। সেখানেই কাটিয়ে দিয়েছেন ১৮ বছর। টিনের ছাপরার ঘরটিও এখন বেহাল।
এ বিষয় স্থানীয় ইউপি সদস্য জেলানী সাজোয়াল বলেন, ওই দম্পতির জাতীয় পরিচয় পত্র নেই। এ ছাড়া সময়ের স্বল্পতা কারণে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করাও সম্ভব হয়নি। এ কারণেই তারা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমীনুল ইসলাম বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখবো কি কারণে তালিকা তার নাম ওঠেনি। তিনি প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন হলে তাকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।