শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
বিনোদন ডেস্ক।।
‘ভালোবাসা অন্ধ হয়। ভালোবাসার চোখ থাকে না। আমি ‘বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিকের কাজটা করতে গিয়ে, ওনার সম্পর্কে গবেষণা করতে গিয়ে, ওনাকে জানাতে, ওনার দর্শন বুঝতে গিয়ে আমি ওনার প্রেমে পড়ে গেছি। সেই প্রেম থেকেই কাজটা করছি। সুতরাং প্রত্যেকটা শট, প্রত্যেকটা মূহুর্ত আমার কাছে কল্পনার মতো। আমার কাছে বারবার মনে হচ্ছে, উনি কি দেখতে পাচ্ছেন- শুনতে পাচ্ছেন! এভাবেই বলেছিলেন অভিনয়শিল্পী আরিফিন শুভ।
বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিকে শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। বলা চলে, এই ছবি তার জীবনের সবচেয়ে সাধনার জায়গা। জীবনের সেরা চরিত্রও বটে। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনা নির্মিত হচ্ছে ছবিটি। বড় বাজেট। স্বভবতই প্রশ্ন জাগে এই ছবিতে কত টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন শুভ? সেই বিষয়টি এবার সামনে এনেছেন এই অভিনেতা।
‘বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিকের জন্য অরিভিন শুভ পারিশ্রমিক নিয়েছেন মাত্র ০১ (এক) টাকা! বুধবার (০৯ জুন) সেই পারিশ্রমিকের ব্যাংক চেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন শুভ। কিন্তু কেনো এতো কম টাকা পারিশ্রমিক নিলেন? অভিনয় করে খুব যে টাকা পয়সাওয়ালা হয়ে গেছেন, সেটাও না। কোন সাহসে তবে মাত্র এক টাকার বিনিময়ে এত দীর্ঘ সময়ের একটি কাজে যুক্ত হলেন?
অরিফিন শুভ বলেন, ‘শুনেছি, বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের ১১ বছর ৪ মাস ২২ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। এই মানুষটার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য স্যাক্রিফাইস। জীবদ্দশায় মানুষ ও দেশের জন্য কেবল ত্যাগই করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর সাহস ও স্যাক্রিফাইসের কাছে আমার এই স্যাক্রিফাইস কিছুই না। মনে হয়েছে, এই সামান্য স্যাক্রিফাইসের মাধ্যমে তাঁর চরিত্রের গভীরতা কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারব। সেই ভাবনা থেকেই পরিচালককে বলেছিলাম, প্রাপ্য যাই হোক না কেনো, আমি নেব না। এটাও বলেছিলাম, যেহেতু আমার রক্ত, ঘাম সবই এই সিনেমায় থাকবে, পরিশ্রম করবো—ফ্রি কাজ করবো না। আমি এক টাকা নেব, নিয়েছি।’
২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুতে অভিনয়ের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পান আরিফিন শুভ। তার আগে পাঁচ দফা অডিশন হয়। দুইবার ভারতে, তিনবার বাংলাদেশে। আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে চূড়ান্ত করার দিন শুভর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোনো শর্ত আছে? তখন বললাম- শর্ত একটাই, সম্মানি নেব এক টাকা।’ কেনো? জবাব শুনে তাঁরা মুগ্ধ। পরিচালক শ্যাম বেনেগালের কাছে তাঁর উপাধিই হয়ে গেল ‘ওয়ান টাকা আর্টিস্ট’। শুভ মনে করেন, এটা তাঁর জীবনের অন্য রকম এক স্বীকৃতি।
শুভ বলেন, ‘তাঁরা কিন্তু আমার শর্তে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হননি। আমাকে ফাইট করতে হয়েছে। এক টাকার চেকটা ফাইনালি আমার হাতে আসতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।’
আরিফিন শুভর কথায়, ‘অর্থ দিয়ে হয়তো পার্থিব কিছু সুখ পাওয়া যাবে, কিন্তু আত্মার তৃপ্তি মিলবে না, সে সুযোগ সৃষ্টিকর্তা আমাকে দিয়েছেন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, শ্যাম বেনেগালের মতো পরিচালকের সান্নিধ্য। এসব টাকা দিয়ে মাপা বোকামি। আমার আসলে কোনো প্রাপ্তির আশা নেই। এবার আমি কী করতে পারি, দেখি।’