রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
তালতলী (বরগুনা)প্রতিনিধি।।
বরগুনার তালতলীতে জোর করে বাল্যবিয়ে দেওয়াতে ২০ দিন পরে আত্মহত্যা করেন সাবিনা আক্তার(১৭)কলেজ ছাত্রী। এই আত্মহত্যা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
গত বৃহস্পতিবার(২০ আগষ্ট) দুপুরের পরে রান্না ঘরের চালরের সাথে ফাঁসদিয়ে আত্নহত্যা করেন কলেজ ছাত্রী। সাবিনা আক্তার তালতলী সরকারী কলেজে একাদশ শ্রেনীতে লেখাপড়া করেন। তিনি উপজেলার সকিনা এলাকার মজনু হাওলাদারের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,চলতি মাসের শুরু দিকে উপজেলার সকিনা এলাকার মনজু হাওলাদারের মেয়ে সাবিনা আক্তার সাথে একই ছোটবগী ইউনিয়ে ঠংপাড়া এলাকার জালাল মৃধার ছেলে মিজানুরের সাথে প্রায় ২০ দিন আগে পারিবারিক ভাবে মেয়ের মতামত ও অজান্তে জোরপুর্বক বিয়ে দেয় চাচা শহিদ ও বাবা। এই বিয়ের পর থেকেই কলেজ ছাত্রী স্বামীর বাড়িতে যাবেনা বলে পরিবারকে জানিয়ে দেন। তবুও জোর করে পাঠানো হয়। একবার মাত্র স্বামীর বাড়িতে গিয়ে আর না যাওয়ার কথা বললে সাবিনার উপর নেমে আসে অমানবিক র্নিযাতন যার এক পার্যায় সাবিনা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় বলে জানান তার পরিবার। আত্মহত্যা পরে তাকে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষনা করেন।
এদিকে নিহত সাবিনার বোন সাওয়দা আক্তার বলেন আমার বোন পড়ালেখা করতে চেয়েছিলো কিন্তু আমার চাচা শহিদ ও বাবা মজনু জোর করে বাল্যবিয়ে দেয়। এই বিয়েতে আমাদের পরিবারের বাবা ছাড়া কেউ জানি না। আমাদের মতামত ছাড়াই বিয়ে দেন তারা। কিন্তু পরে আমার বোন স্বামীর বাড়িতে যেতে চায়নি কিন্তু তাকে বাধ্য করা হয়েছে। আমার বোনকে স্বামীর বাড়ি পাঠাতে মানসিক চাপ দেওয়াতে সে আত্মহত্যা করেন। আমি বিয়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আমাকেও আমার চাচা মারধর করেন। আমার বোনের আত্মহত্যার পেছনে আমার চাচা ও বাবা জরিত। আমি আমার বোনের হত্যার বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক লোক বলেন সাবিনার ১৮ বছর হয়নি সে কলেজে পড়ে। তাকে জোর করে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিয়ের পেছনে সাবিনার চাচা ও বাবা জড়িত। তারা জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়াতে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থার দাবি করছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শহিদ বলেন বিয়ে দেওয়া হয়েছে মেয়ের মতামতের বিরুদ্ধে। কিন্তু মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ার কথা বললে কিছুটা রাগারাগি করা হয়েছে। পরে তালাকের ব্যবস্থাও করা হয়েছে কিন্তু তার আগেই সাবিনা আত্মহত্যা করেছেন। আর সাবিনার বোনকে মারধরের বিষয় অস্বীকার করে বলেন রাগারাগি করা হয়েছে মাত্র। তার আত্মহত্যার জন্য আমি কেন জড়িত থাকবো। আমি কিছু জানি না।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, আত্মহত্যার পরে তাকে আমতলীতে নেওয়া হয়েছে। সেখানকার থানা পুলিশ একটা অপমৃত্যু মামলা নিয়ে লাশ ময়না তদন্তর জন্য বরগুনা পাঠিয়েছে। এবিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।